২৪ বছরের যুবক রতন দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে অর্থাভাবে বিনাচিকিৎসায় শিকল বন্দি অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। রতনের অসহায় দরিদ্র পরিবার রতনের উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজের মহানুভব ব্যক্তিদের হাতে সহায়তার জন্য হাত পেতেছেন। যুবক রতন মন্ডল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মোল্লাপাড়া গ্রামের মৃত চিত্তরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রতনের শৈশব কেটেছে প্রচন্ড দুরন্তপনায়। একাই মাতিয়ে রাখতেন পরিবারসহ বাড়ির সবাইকে। সেই দুরন্তপনাই কাল হয়েছে রতনের জীবনে। আট বছর বয়সে খেলতে গিয়ে গাছের শিকড়ের সাথে লেগে পরে গিয়ে মাথায় প্রচন্ড আঘাত পায় রতন। ওইসময় চিকিৎসার সুস্থ্য হলেও মাঝে মাঝে অসুস্থ হয়ে পরতেন রতন বাড়ৈ। এ ঘটনার কিছুদিন পর রতন বাড়ৈ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
সূত্রে আরও জানা গেছে, এর মধ্যেই রতনের দরিদ্র বাবা পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি গ্রামঘুরে আইসক্রীম বিক্রেতা চিত্তরঞ্জন বাড়ৈ মৃত্যুবরণ করেন। এরপর চরম আর্থিক দৈন্যতায় অসহায় হয়ে পরে পাঁচ সদস্যর ওই পরিবার। আর্থিক সংকটের কারণে থেমে যায় রতন বাড়ৈর চিকিৎসা। নিয়মিত চিকিৎসা করাতে না পারায় দিনে দিনে রতনের পাগলামি বেড়ে যায়। সে বাড়িঘর ভাঙচুর, মানুষজন দেখলেই তাদের ওপর হামলা করে কামড়িয়ে আহত করতে থাকে।
যে কারণে রতনের মা ও বোনেরা বসত ঘরের পিছনে একটি টিনের চালা ঘরে রতন বাড়ৈকে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে কোমড়ে শিকল বেঁধে তালা দিয়ে রেখেছেন। অনেক সময় রতন নিজের হাতে খাবার খেলেও পাগলামির কারণে অনেক সময় খাবার ছুড়ে ফেলে দেন। পরিবারের লোকজন মাঝে মধ্যে তাকে গোসল করিয়ে দেন। হামলার ভয়ে বাড়ি ও পরিবারের সবাই তার কাছে যেতে ভয় পায়।
রতন বাড়ৈর মেঝ বোন সিমা বাড়ৈ বলেন, ছোটবেলায় আমার ভাই রতন বাড়ৈ সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। আট বছর বয়সে একটি দুর্ঘটনায় সে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় তার পাগলামি বেড়েই চলছে। রতনকে সু-চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা সরকার ও সমাজের মহানুভব ব্যক্তিদের কাছে জোর দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারিহা তানজিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে রতন বাড়ৈর সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য সুপারিশ করা হবে।