বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) হিসেবে সদ্য পদায়ন হওয়া ডা. শর্মী রায়কে যোগদান না করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা। রবিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে চিতলমারী উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে মানববন্ধন করে এ দাবী জানান। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমনের সাথে দেখা করলে তিনি উর্দ্ধোতন কর্মকর্তাদের জানানোর আশ্বাস দেন।
এছাড়া একই দাবিতে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের দাবি ডা. শর্মি রায়কে নয় একজন দক্ষ ও সৎ কর্মকর্তাকে এই উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হোক।
স্থানীয় বাসিন্দা আল আমিন বলেন, ডা. শর্মী রায় মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা থাকা অবস্থায় দূর্নীতির কারণে স্থানীয়রা তার বিরুদ্ধে মিছিল ও সভা করেছেন। তার মাধ্যমে ওই উপজেলার মানুষ তেমন সেবা পায়নি। আমরা চিতলমারীবাসী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সাবেক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মামুন হাসানকে তাড়িয়েছি। এখন পুনরায় আরেক দূর্নীতিবাজকে মেনে নিতে পারব না।’
শিক্ষার্থী কাওছার আলী বলেন, স্থানীয়দের দাবি উপেক্ষা করেও যদি ডা, শর্মীকে চিতলমারীর ইউএইচএফপিও হিসেবে দেওয়া হয় তা হলে চিতলমারী বাসী দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। প্রয়োজনে তাকে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকী দেয় আন্দোলন কারীরা।
চিতলমারী ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন তালুকদার বলেন, স্থানীয়দের দাবির বিষয়টি উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শর্মী রায় বলেন, বদলীর আদেশ পেয়েছি। যোগদানের বিষয়টি ওখানের মানুষের উপর নির্ভর করে। তারা যদি আমাকে গ্রহণ করতে না চায় তাহলে আমি যাব না। তবে মোড়েলগঞ্জে ছাত্র-জনতা আমার বিরুদ্ধে মিছিল করেননি। একজন ব্যক্তি তার দূর্নীতি ধামাচাপা দিতে টাকা দিয়ে কিছু লোককে দিয়ে মিছিল করিয়েছেন। সুযোগ পেলে অবশ্যই চিতলমারীবাসির সেবা করব।’
বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন চিকিৎসক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রাণালয় থেকে ডা. শর্মী রায়কে চিতলমারীতে বদলী করা হয়েছে। বদলীর ব্যপারে আমাদের কোন হাত নেই। তার বিরুদ্ধে মিটিং-মিছিল ও মানবন্ধন হয়েছে বলে শুনেছি। বদলী ঠেকাতে হলে ছাত্র প্রতিনিধিদের ডিজি (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক) বরাবর যোগাযোগ করতে হবে।’
গেল ‘গত ১৩ নভেম্বর মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শর্মী রায়কে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে বদলীর আদেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তর থেকে। মোরেলগঞ্জে কর্মরত থাকা অবস্থায় দূর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে স্থানীয়রা ড্.া শর্মী রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছিলেন স্থানীয়রা। ।
এছাড়া পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ২০১৯ সাল থেকে চিতলমারি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার মামুন হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ২০ আগস্ট ডা. মামুন হাসানকে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় বদলি করা হয়।