ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

আদালতে হত্যাকারীদের স্বীকারোক্তি

প্রতিশোধ নিতেই টিকটকার মুন্নি হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: ১৯:৩৪, ১৬ নভেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৯:৩৫, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

প্রতিশোধ নিতেই টিকটকার মুন্নি হত্যা

চুয়াডাঙ্গার টিকটকার খালেদা আক্তার মুন্নি (১৮) হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে জড়িত দু'জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। মূলত প্রতিশোধ নিতেই মুন্নিকে হত্যা করে তারা।

 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন পৌর এলাকার হাজরাহাটি শেখ পাড়ার টোকন আলীর ছেলে মানিক আলী ওরফে মানিক মুন্সী (২২) ও একই পাড়ার মইদুল ইসলামের ছেলে পারভেজ মুন্সী ওরফে স্বপন (১৯)।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মানিক মুন্সী জানায়, গত বুধবার (৬ নভেম্বর) সে ও তার বন্ধুরা আলমডাঙ্গা উপজেলার বড়গাংনী গ্রামে মুন্নির সাথে টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য যায়। এসময় মুন্নি স্থানীয়দের সহযোগীতায় তাদেরকে ব্লাকমেইল করে ২০ হাজার টাকা আদায় করে। যে কারণে মুন্নির উপর রাগ করে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি।

গত শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে মোবাইল ফোনে মানিক মুন্সীর সাথে সারারাত ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে শারীরিক সম্পর্ক করতে সম্মত হয় মুন্নি। ওই দিন সন্ধ্যায় মুন্নি সদর উপজেলার বোয়ালমারী-নীলমনিগঞ্জ পিটিআই মোড়ে আসলে পারভেজ মুন্সী তাকে মোটরসাইকেলে বোয়ালমারী শ্বশানের রাস্তার ফাঁকা জায়গায় নিয়ে আসে। পরে তারা পানবরজের পিছনের জঙ্গলে মুন্নির সাথে পালাক্রমে শারীরিক সম্পর্ক করে।

এরপর পারভেজ মুন্সী ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলেও মানিক মুন্সী আরও একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে মুন্নিকে ৫ হাজার টাকা দেয়। মুন্নি সেই টাকা নিতে অসম্মতি প্রকাশ করে ও চিৎকার করে। পরে তার গলা চেপে ধরলে সে উপুড় হয়ে পড়ে যায়। এরপর মানিক তার পিঠের উপর বসে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে ওড়না দিয়ে হাত বেঁধে জঙ্গলেয় ফেলে রাখে। মুন্নির শপিং ব্যাগ ও জুতা নদীতে ফেলে দিয়ে চলে যায়।

পরবর্তীতে গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ৮ টায় হাজরাহাটি-বোয়ালমারী মাঠ থেকে অজ্ঞাতনামা মহিলার অর্ধগলিত পোকা ধরা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহের বিভিন্ন জায়গায় ট্যাটু দেখে খালেদা আক্তার মুন্নির বলে সনাক্ত করে।

এ ঘটনায় হত্যার শিকার মুন্নির মা বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় গত বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-১১। এরপর চুয়াডাঙ্গা ডিবি পুলিশ অভিযান চালিয়ে গত শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাত আড়াইটার দিকে হত্যাকাণ্ডে  জড়িত মানিক ও পারভেজকে তাদের নিজ নিজ বাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আসামী দু'জন আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের কাছে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী  দেওয়ার পর আদালত তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

এমএম

×