ফরিদপুরের বোয়ালমারীর এম এইচ গোল্ডেন জুট মিল নিলামে উঠেছে। জনতা ব্যাংকের ৩৫৫ কোটি ৬ লাখ ২ হাজার ৯৬৮ টাকা ঋণ খেলাপের দায়ে নিলামে উঠেছে বলে জানা গেছে।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞাপন দিয়ে টেন্ডার আহ্বান করেছে জনতা ব্যাংকের করপোরেট শাখা।
শুক্রবার(১৫ নভেম্বর) বিকেল ৩টায় ব্যাংকটির করপোরেট শাখায় টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল। তবে এ সময়ের মধ্যে কতটি টেন্ডার জমা পড়েছে তা জানা সম্ভব হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার চতুল ইউনিয়নের কলারন এলাকায় ২০১০ সালে প্রায় ১৬ একর জমির উপর এম এইচ গোল্ডেন জুট মিল প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১২ সালে কারখানাটি উৎপাদন শুরু করে। জনতা ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারাকাতের শ্বশুড়বাড়ির লোকজন কারখানাটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকলেও এর মালিকানা ছিল ঢাকার টঙ্গীতে অবস্থিত অ্যানোনটেক্স গ্রুপের।
এই শিল্প গোষ্ঠীর এমডি ইউনুস বাদলের নামেই জনতা ব্যাংকের করপোরেট শাখা থেকে ওই ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছিল। ইউনুস বাদল পরিচিত ছিলেন ড. আবুল বারাকাতের ঘনিষ্টজন হিসেবে। বর্তমানে ইউনুস বাদল ও তার ভাই ইউসুফ বাদল জার্মানিতে পলাতক। তাদের অবর্তমানে কারখানাটি এতদিন পরিচালনা করতেন ড. বারাকাতের স্বজনরা।
এলাকাবাসী ও জুট মিল সুত্রে জানা গেছে, ড. বারাকাতের স্ত্রী শাহিদা পারভিনের বড় ভাই মিজানুর রহমান গোল্ডেন জুট মিলের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। মিজানুর রহমানের বড় ছেলে মহসিন হোসেন পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলের পাশে বোনানজা জুট মিল স্থাপন করে সেটি পরিচালনা করছেন তাঁরা।
অন্যদিকে এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলের অবস্থা করুন। প্রায় পরিত্যক্ত। অভিযোগ উঠেছে, এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলের সব যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে বোনানজা জুট মিলে স্থাপন করা হয়েছে। গোল্ডেন জুট মিলের নামে গৃহীত ঋণের কোন কিস্তি এবং সুদ পরিশোধ না করায় কারখানাটি খেলাপি হয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলে গিয়ে জানা যায়, জুট মিলটিতে কর্মকর্তারা বসেন না। এখন সব কর্মকর্তারা বোনানজা জুট মিলে বসেন।
জানতে চাইলে বোনানজা জুট মিলের কারখানার প্রশাসন বিভাগের ম্যানেজার সৈয়দ আব্দুল মান্নান বলেন, লোকসানের হওয়ার কারণেই হয়তো অ্যানোনটেক্স গ্রুপ ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলের যন্ত্রপাতি খুলে বোনানজা মিলে লাগানোর বিষয়টি সত্য নয়।
এ বিষয়ে বোনানজা জুট মিলের কারখানার নির্বাহী পরিচালক (ইডি) মিজানুর রহমান বলেন, এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলে আমরা সবাই চাকরি করতাম। মিলটি খেলাপী হয়ে যাওয়ার কারনে আমরা সেটি ছেড়ে দিয়েছি।
এসআর