সরকারি মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) ১২টি চা-বাগানসহ সকল চা-শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি-রেশন অবিলম্বে পরিশোধ ও পিএফ চাঁদা জমা প্রদানের দাবিতে শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখার নেতাকর্মীরা নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
বেলা ২টায় নগরীর কীনব্রিজ এলাকা থেকে মিছিল বের করা হয়। মিছিল পূর্ব-সমাবেশে বক্তারা বলেন দীর্ঘ প্রায় ৩ মাস যাবত সরকারি মালিকানাধীন এনটিসির ১২টি বাগানের প্রায় ১২ হাজার শ্রমিক মজুরি-রেশন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন।
শ্রমিকরা অর্ন্তবর্তী সরকারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করে দাবি জানিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে বাধ্য হয়ে গত ২৬ দিন যাবত লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন। কিন্তু তাতেও সরকারের টনক নড়ছেনা। মজুরি-রেশন না পেয়ে এনটিসির বাগানসমূহের প্রায় ৪০-৫০ হাজার মানুষ আজ অনাহারে দিনাতিপাত করছেন।
বর্তমান দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন উর্দ্ধগতির সময়ে দৈনিক মাত্র ১৭৮.৫০ টাকা মজুরিতে এমনিতেই চা-শ্রমিকদের অর্ধাহার-অনাহারে কাটাতে হয়। তার উপর যদি শ্রমিকদের মজুরি ও রেশন বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে শ্রমিকদের কি অবস্থায় পড়তে হয় তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।
অর্ন্তবর্তী সরকার মুখে অনেক বড় বড় কথা বললেও বাস্তবে চা-শ্রমিকরা আজ উপলব্ধি করছেন তাদের এই দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর কেউ নেই। শুধু এনটিসির বাগানই নয়, সমগ্র চা-শিল্পের শ্রমিকরা আজ কঠিন সময় পার করছেন।
চা-শ্রমিকদের এই সকল বঞ্চনার ব্যাপারে মালিক-সরকার ও দালাল নেতারা নির্বিকার। তাই চা-শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকার এই কঠিন সময়ে অতীতের শিক্ষা নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তুলে দাবি ও অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে অগ্রসর হতে হবে।
সিলেট জেলা ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চা-শ্রমিক সংঘ মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হরিনারায়ন হাজরা, নারী চা-শ্রমিক লক্ষী রানী বাক্তি, হোটেল শ্রমিকনেতা সাদেক মিয়া, স’মিল শ্রমিকনেতা রুহুল আমিন, জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা কমিটির আহবায়ক শুভ আজাদ শান্ত প্রমুখ।