রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে প্রায় ১৮ ঘণ্টা আমরণ অনশনের পর উপাচার্যের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। রাতভর খোলা আকাশের নিচে অনশনে থাকার পর শুক্রবার দুপুরে ছয় শিক্ষার্থী তাদের অনশন আগামী সোমবার পর্যন্ত স্থগিত করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাবির ভর্তি পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জোহা চত্বরে অনশনে বসেন প্রথমে তিনজন। পরে আরও তিনজন যোগ হয়।
অনশনে নেতৃত্ব দেয়া রাবি শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মারুফ জানান, উপাচার্য ইতিমধ্যে ভর্তি সংক্রান্ত প্রেস রিলিজ ও ভর্তি বিজ্ঞপ্তি বাতিল করেছেন। পাশাপাশি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন রিভিউ কমিটি গঠনের মাধ্যমে আগামী সোমবারের মধ্যে ভর্তি বিজ্ঞপ্তিতে পোষ্য কোটার বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত জানাবেন।
এ শিক্ষার্থী আরও জানান, আমরা আমাদের দাবিতে অটল। আমাদের বক্তব্য পরিষ্কার, পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করতে হবে। এখানে চুল পরিমাণ ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। উপাচার্য স্যারের কথামতো আমরা আমাদের কর্মসূচি আগামী সোমবার পর্যন্ত আপাতত স্থগিত করেছি। যদি সামনে এই পোষ্য কোটা নিয়ে কোনো টালবাহানা করা হয় তা হলে আমরা আবার কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচির ডাক দেব।
রাবিতে পোষ্য কোটা থাকছে না। আমরা পোষ্য কোটাকে জাদুঘরে পাঠাতে চাই। রাবিতে প্রথম পোষ্য কোটা চালু হয়েছিল তাই রাবি থেকেই প্রথমে নির্মূল হয়ে যাবে এই নিকৃষ্ট ফাজলামো কোটা বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষার ভর্তি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা নাতি-নাতনি কোটা বাতিল কর হয়। তবে এ কোটায় শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের বিবেচনা করা হবে। পোষ্য কোটা বহাল রেখে ১% কমিয়ে ৩% রাখা হয়েছে। এ কারণে আমরণ অনশনে বসেন প্রথমে তিন শিক্ষার্থী। পরে তাদের সঙ্গে যোগ দেন আরও তিনজন।
আন্দোলনে বসা শিক্ষার্থীরা হলেন, পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান মারুফ, সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আবুল কলাম আজাদ, ফার্সি বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াজেদ, ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী আল-শাহরিয়া ও শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মাসুম তবে একজনের নাম জানা যায়নি।
মেহেদি হাসান মারুফ বলেন, আমাদের চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের দাবি ছিল কোটার বিরুদ্ধে। সেখানে এ কোটাই যদি থেকে যায়, তা হলে চব্বিশের বিপ্লবীদের সঙ্গে বেইমানি করা হবে।