বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন সালাউদ্দিন চৌধুরী সাআদ। ৪ আগস্ট তাদের মিছিল জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। এ সময় মাথা ও ঘাড়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।
বিঁধে থাকা ৭টি গুলি নিয়ে তিন মাস যাবৎ অসহ্য যন্ত্রণায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় চিকিৎসক অস্ত্রোপচারও করছেন না। সাআদ জেলার মিঠামইনের কাঞ্চনপুরের শাহা চৌধুরী ও বাবলী আক্তারের বড় ছেলে।
সাআদ আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদ্রাসায় মিশকাতে পড়ছেন। তাঁর বাবা ২০২২ সালে সৌদি আরবে গিয়েছেন সংসারে সচ্ছলতা আনতে। মা একজন গৃহিণী। বর্তমানে শহরের উকিলপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকেন তাঁরা।
সালাউদ্দিন চৌধুরী সাআদ বলেন, ‘আমি পড়তেছিলাম তখন। মিছিল বের হলে আমিও মিছিলে যোগ দেই। মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ অফিস পর্যন্ত যাওয়া হয়। ওই সময় ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী এসে প্রথমবার গুলি করলে সেই গুলি আমার হাতে লাগে।
পরে যখন আমি চলে যেতে থাকি, তখন আরেকটা গুলি ছুড়লে সেই গুলি আমার মাথার পেছনে আর ঘাড়ে লাগে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আমি সেখানে পড়ে যাই। তখন কিছু ছাত্র আমাকে উদ্ধার করে। পরে সেখান থেকে অন্যরা ছাত্ররা আমাকে স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে দুইদিন পরে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে মাথার এক্স-রে করাই। মাথায় ছয়টা গুলি ছিল।
হাসপাতাল থেকে বলে দেওয়া হয়, গুলিগুলো না খুললে ভালো হবে, খুললে রিস্ক আছে। তাই হাসপাতাল থেকে খুলে দেয় নাই। পরে ঢাকা পিজি হাসপাতালে গেলে একই কথা বলেছে। এখানে হবে না। মাথার গুলিগুলো খুলতে গেলে রিস্ক আছে। হাতে এক্স-রে করেছিলাম, হাতে দুইটা গুলি ছিল।
নিজের অসহ্য যন্ত্রণার কথা উল্লেখ করে সাআদ বলেন, ‘মাথায় ৬টা আর ঘাড়ে ১টা ও হাতে দুইটা গুলি লাগে। হাতের একটা গুলি ডাক্তার বের করেছেন। কিন্তু বাকিগুলো বের করাটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ তাই বের করেনি। মাথার গুলির জন্য রাতে ঘুমাতে পারি না। বালিশে মাথা রাখলেই ব্যথা করে। পড়াশোনা করতে খুব কষ্ট হয়’।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রাসেল বলেন, ‘আহতদের তালিকা যাচাই-বাছাই চলছে। আমাদের এখানে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ও শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে।
তালিকায় না থাকলে যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ওইখানে যদি চিকিৎসা হয়, তাহলে আমরা তার চিকিৎসা এখানে করব। যদি না হয় তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করব’।