কালের পরিবর্তনে নাটোর লালপুরের ঐতিহ্য কাঁসা শিল্প বিলুপ্তির পথে। কাঁসার বিভিন্ন রকমের ব্যবহারিক পাত্র তৈরির সময় ঢক ঢক, ঝন ঝন শব্দে ও ক্রেতাদের আনাগোনায় মুখরিত থাকত এই কাঁসা পল্লী। এক সময়ের দৈনন্দিত তৈজসপত্রের অধিকাংশই তৈরি হতো কাঁসা দিয়ে। আধুনিক সভ্যতার অ্যালুমিনিয়াম, সে স্টেইনলেস স্টিল, ম্যালামাইন, সিরামিকসহ প্লাস্টিক সামগ্রী বাজার দখল করে নেওয়ার কারণে লালপুরের কাঁসা পল্লীতে ব্যবহারিক পাত্র তৈরির ঢক ঢক, ঝন ঝন শব্দ আর শোনা যায় না। ক্রেতাদের আনাগোনাও চোখে পড়ে না। ঝিমিয়ে পড়েছে কাঁসাজ দ্রব্যের ব্যবসায়ীরা। আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামাঞ্চলের মানুষের সাংসারিক কাজে কাঁসাজ পণ্যের কদর ফুরিয়ে আসছে। লালপুরসহ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাঁসা শিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। জানা যায়, নবাবী আমলে বর্গীয় হাঙ্গামার সময় বর্গীদের অত্যাচারে ভারতের মুর্শিবাদ জেলার বহরমপুর মহকুমার খাগড়া থেকে কাঁসা বণিক ও শ্রমিক বাংলাদেশের নাটোরের লালপুরে, কলমে ও নবাবগঞ্জে বসতি স্থাপন করেন। লালপুরে প্রায় ৫০টি কারখানায় দক্ষ কারিগররা নিখুঁত হতে বগি থালা, টেডি প্লেট, বর প্লেট, বিভিন্ন ডিজাইনের গ্লাস, গলাচিপা, কলস, রেকাব, পানদানি, ডাবর (বুল), জগ, ঘটি, বাটি, পিকদানি, ফুলদানি, হুক্কা, পাতিল, চামচ, ডেকচি, হাতল, ঘণ্টা ইত্যাদি তৈরি করতেন। চৌদ্দজন মহাজনের মাধ্যমে চার শতাধিক শ্রমিক প্রতিদিন প্রায় পাঁচশ কেজি দ্রব্য উৎপাদন করত। মতামত, কারখানার শ্রমিক নজরুল বলেন, আমরা খুব কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছি।