বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নদী তীরের ফসলি জমির ও নদীর চরের মাটি প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। আসছে ইট পোড়ানোর মৌসুম। অনেক ইট ভাটায় ইট তৈরির কাজ শুরু করেছেন মালিকরা। এই উপজেলায় বৈধ ও অবৈধ প্রায় শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। আর এ সকল ইট ভাটার মালিকরা মাটি সংগ্রহ করছে কখনো ফসলি জমি ক্রয় করে আবার কখনো অবৈধভাবে নদীর চরের মাটি কেটে।
অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে অনেক ভাটার মালিকরা ইট তৈরির জন্য অবৈধভাবে মাটি কেটে নিয়ে তাদের ভাটার মধ্যেই জমা করে রেখেছেন। গত কয়েক মাস ধরে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নদীর চর থেকে অবৈধভাবে মাটি কাটার কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এতে বিভিন্ন স্থানে ভাঙন বেড়ে আরও হুমকির মুখে পড়ছে বিস্তীর্ণ এলাকা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বছরের পর বছর ধরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নদীর চর কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রয় করছে স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। ফরিদপুর ইউনিয়নের কারখানা নদীর চর, নলুয়া ও কলসকাঠী ইউনিয়নের পান্ডব নদীর চরে প্রকাশ্যে প্রতিদিন মাটি কেটে নিচ্ছে ভূমিদস্যুরা। কলসকাঠীর আমিনপুর পান্ডব নদীর চরে ও ফরিদপুর ইউনিয়নের কারখানা নদীর চরে ভয়ংকর সিন্ডিকেট তৈরি করে নদীর চর থেকে মাটি কেটে বিক্রয় করে আসছে তারা। কলসকাঠীর দক্ষিন সাদিস (আমিনপুর চর) থেকে হাবিব মাওলানার মাদ্রাসা পর্যন্ত খাস সরকারী সম্পত্তি যার বেশি ভাগই দুমকী থানাধীন আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের ১ নং খতিয়ানের খাস সরকারী সম্পত্তির আওতায়। দীর্ঘ ১০ বছরের বেশি সময় ধরে দক্ষিন সাদিস গ্রামে সরকারি এই জমির মাটি কেটে নিচ্ছে ইটভাটার মালিকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টি ট্রলারে ও ভেকু মেশিন দিয়ে আমিনপুর পাণ্ডব নদীর চরে মাটি কেটে সরকারী খাস সম্পত্তি কলসকাঠীর অর্ধশত ইটভাটায় নিয়ে বিক্রি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট। সরকারী সম্পত্তি রক্ষার জন্য সরকার বার বার পদক্ষেপ গ্রহন করেও ভূমিদস্যূদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারছে না। প্রতি বছর আমিনপুর পাণ্ডব নদীর চর থেকে কোটি টাকার মাটি বিক্রি করছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।অবৈধ ভাবে মাটিকাটা বন্ধের দাবিতে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরে মানববন্ধন প্রতিবাদ সমাবেশ করেও কোন সুফল পাচ্ছে না। এসব নদীর চরের সরকারি খাস সম্পত্তি রক্ষার জন্য দুমকী উপজেলার নিবার্হী কর্মকর্তা ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও পটুয়াখালী-বরিশাল জেলা প্রশাসকের সু-দৃষ্টি কামনা করছে এলাকাবাসী।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানান, কোনো অনিয়ম হলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভিন্ন সময় অবৈধ ভাবে নদী থেকে মাটি কাটা দায় ভ্রাম্যমান আদালতে অনেকের জেল জরিমানা করা হয়েছে।
নাহিদা