২৮ বছর বয়সী সুমাইয়া বেগম। স্বামী আব্দুল লতিফ (৩৮) স্থানীয় বাজারে চায়ের দোকানদার । এই দম্পত্তির বিয়ে হয়েছে প্রায় দশ বছর হলো। ভোলার লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ডের পাঙ্গাসিয়া গ্রামের মিজি বাড়ির বাসিন্ধা তারা। সাত বছর আগে আব্দুল লতিফ ও সুমাইয়া দম্পত্তির ঘরে জন্ম নেয় ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান। তাদের সংসার ভালোই চলছিলো। গত এক বছর এক মাস আগে তাদের সংসারে জন্ম নেয় আরো একটি কন্যা সন্তান। দ্বিতীয় সন্তান স্বাভাবিক ভাবে প্রসবের পর রক্তক্ষরণ শুরু হয় সুমাইয়ার। রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় পাশর্^বর্তী উপজেলা চরফ্যাশন হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকগণ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে সুমাইয়ার কিডনিতে সমস্যা হয়েছে। দ্রুত তাকে উন্নত চিকিৎসা করাতে হবে।
চিকিৎসকের পরামর্শে সুমাইয়াকে ঢাকায় এনে প্রথমে বাংলাদেশ মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়। সেখানের চিকিৎসকগণ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মিরপুরের কিডনি হাসপাতালে রেফার করে। মিরপুর কিডনি হাসপাতালে নেয়ার পর সুমাইয়ার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় লাইফ সাপোর্টে ছিলেন কিছুদিন। কিছুটা সুস্থ হলে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকগণ জানান সুমাইয়ার দুইটি কিডনি বিকল হয়ে গেছে। তাকে বাঁচাতে হলে দ্রুত দুইটি কিডটি প্রতিস্থাপন করতে হবে।
সুমাইয়ার দুইটি কিডনি বিকল হয়ে গেছে শুনে ভীষণ অসহায় হয়ে পড়েন স্বামী আব্দুল লতিফ। ছোট ছোট দুইটি কন্যা সন্তানের ভবিষতের চিন্তা এবং স্ত্রীর কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য ডোনার খোঁজা এবং চিকিৎসার খরচ সবকিছু মিলিয়ে এখন দিশেহারা আব্দুল লতিফ । তিনি জানান, আমি একজন সামান্য চায়ের দোকানদার। গত এক বছর এক মাস ধরে আমার স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ১০ লাখ টাকার মতো খরচ করেছি। এর মধ্যে প্রায় ৬ লাখ টাকাই ধার-উদার করা। স্ত্রীর দুইটি কিডনি বিকল হয়ে আছে। চিকিৎসকগণ বলেছে, কিডনি প্রতিস্থাপন করতে ডোনার ঠিক করতে। যতদিন ডোনার না পাওয়া যাবে ততদিন কিডনি ডায়ালাইসিস করাতে হবে। আমি গবির মানুষ ডোনার পাবো কোথায়, কে আমার স্ত্রীরজন্য কিডনি দিবে। স্ত্রীকে বাঁচাতে তাই এখন প্রতি সপ্তাহে একবার চরফ্যাশনের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করাচ্ছি। ডায়ালাইসিস এবং ওষুধ বাবদ প্রতি সপ্তাহে এখন ৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। আমি সামান্য চায়ের দোকান করে এখন স্ত্রীর চিকিৎসা করাবো, নাকি সংসার চালাবো, না দেনা দিব। কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।
আব্দুল লতিফ আরো বলেন, আমার স্ত্রীকে কিডনি প্রদান করতে হয়তো কোনো ডোনার পাব না। তবে যতদিন বাঁচিয়ে রাখা যায়, তার চেষ্টা করতে পারবো। এখন ডায়ালাইসিসের অর্থ জোগাড় করতে আমাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতি মাসে প্রায় ২০ হাজারের মতো টাকার দরকার। এজন্য আমি সমাজের বিত্তবান এবং সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সকলের কাছে আমার স্ত্রীকে বাঁচাতে আর্থিক সহায়তা চাচ্ছি। সকলের সহায়তায় হয়তো আরো কিছু দিন বেঁচে থাকবে আমার স্ত্রী সুমাইয়া ।
অসুস্থ স্ত্রী সুমাইয়াকে বাঁচাতে বিত্তবানদের সহায়তা চাচ্ছেন স্বামী লতিফ
শীর্ষ সংবাদ: