ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

একটি ভাঙ্গা কালভার্ট হাজারো মানুষের দূর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঝিনাইদহ, ১৪ নবেম্বর

প্রকাশিত: ১৯:১৮, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

একটি ভাঙ্গা কালভার্ট হাজারো মানুষের দূর্ভোগ

দেড় বছর ধরে ভেঙ্গে পড়ে আছে কালভার্টটির এক পাশ। ভাঙ্গা অংশে দেওয়া হয়েছে লাল কাপড়ের সতর্ক সংকেত। রাখা হয়েছে খোলামেলা। ছোট-খাটে দুর্ঘটনা ঘটতেই আছে। যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনায় অনেক জীবনহানির আশঙ্কাও রয়েছে। প্রতিদিন শতশত মানুষ চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। অসংখ্য মানুষের নজরে পড়লেও টনক নড়ে না কর্মকর্তাদের। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ছালাভরা-রামনগর সড়কে এই ভাঙ্গা কালভার্টটি।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ-যশোর মহসড়কের ছালাভরা থেকে নেমে ছালাভরা-পন্নাতলা বাজার হয়ে রামনগর গ্রামীন সড়কের কালভার্টটি ভেঙ্গে পড়ে আছে দীর্ঘদিন। কালভার্টটির পাটাতনের অর্ধেক অংশের ঢালাই ধসে গিয়ে শুধু রডগুলো ভেসে উঠেছে। দেখা দিয়েছে বিশাল গর্ত। ভারী বৃষ্টির পানি নিস্কাশনের জন্য এই স্থানে কালভার্ট আকারের ছোট ব্রীজ নির্মাণ করা হয় সরকারিভাবে। এ সড়ক দিয়ে অন্তত ৮ গ্রামের মানুষ চলাচল করে। এছাড়া রয়েছে আমিন উদ্দিন ও জহর আলী ডিগ্রী কলেজ রামনগর, রামনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রামনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়, পন্নাতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পন্নাতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুন্দরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুন্দরপুর দাখিল মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ রয়েছে হাফেজিয়া মাদরাসা। গ্রামীন সড়কের এই কালভার্টটি ভেঙ্গে যাওয়ায় চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে অন্তত ৮ গ্রামের হাজারো মানুষের। প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে কালভার্টটি ভেঙ্গে পড়ে থাকলেও যেন দেখার কেউ নেই। বিশেষ করে কৃষকের উৎপাদিত ফসল আনা-নেওয়া ও শিক্ষার্থীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এলাকায় রয়েছে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভাঙ্গা অংশে দেওয়া হয়েছে লাল কাপড়ের সতর্কতা সংকেত। জানাশুনা লোকজন সতর্কতার সাথে চলাফেরা করলেও অজানা লোকজন পড়েন দুর্ঘটনায়। আর সেখান দিয়ে প্রতিনিয়তই ঝুঁকি নিয়ে চলছে পন্যবাহী অটোভ্যান, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, করিমন, ভ্যান, ইজিবাইক, নছিমনসহ নানা ধরনের যানবাহনও শিক্ষার্থীসহ এলাকার সাধারণ মানুষ। মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে কালভার্টটি। ফলে মহারাজপুর ও সুন্দরপুর-দূর্গাপুর ইউনিয়নের আশপাশের কয়েক গ্রামের হাজারো মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। বিপদজনক এই কালভার্টের কারণে জরুরী সেবা অ্যাম্বুলেন্স কিংবা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি গ্রামের ভেতরে প্রবেশে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
এছাড়া হাটবাজারে কৃষিপণ্য সরবরাহ করা, হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাতায়াত কিংবা অন্য কাজে শহরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে প্রতিদিন এই রাস্তায় কয়েকশ অটোরিকশা ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীসহ আসা-যাওয়া করে। বিশেষ করে রাতের বেলায় এই কালভার্টের ওপর দিয়ে যাতায়াত কালে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ ব্যাপারে প্রানঘাতী কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই এখানে একটি নতুন কালভার্ট মেরামতের দাবি করেন স্থানীয়রা। একাধিক পথচারীা জানান, সাধারণ মানুষের চলাচলের ভাঙ্গা কালভার্টটি সংস্কারের জন্য তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। তারা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন। কালভার্টের পাশের একাংশের ঢালাই ভেঙ্গে বিশাল আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পরে অপরিচিত লোকজন ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় বেশিরভাগ দুঘর্টনার শিকার হচ্ছেন। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্যও সড়কটি আরো বিপদজনক। কালভার্টটি দ্রুত নির্মাণের জন্য তারা সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ কামনা করেছেন।
ঝিনাইদহ এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মনোয়ার উদ্দিন বলেন, গ্রামীন সড়কের কালভার্ট ভেঙ্গে সাধারণ মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ হচ্ছে এ বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে সাধারণ মানুষের সমস্যর কথা বিবেচনা করে সংস্কারের জন্য এলজিইডি ঢাকা অফিসে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

×