কেশবপুরের বেসরকারি ক্লিনিক মডার্ণ হাসপাতালের ভুল অপারেশন কারণে মৃত্যু পথযাত্রী রুগীকে বাঁচাতে সবকিছু হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছেন মঙ্গলকোট গ্রামের শরিফুল ইসলাম। তার স্ত্রী মর্জিনা বেগমের সিজার করার সময় মুত্রনালীর কয়েকটি শিরা কেটে ফেলায় দীর্ঘ ৮ মাস ধরে তিনি মৃত্যুশয্যায়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট বুধবার লিখিত অভিযোগ করেছেন শরিফুল ইসলাম।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, কেশবপুর সরকারি হাসপাতালের সামনে অবস্থিত বেসরকারি ক্লিনিক "মডার্ণ হাসপাতালটি" প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই একের পর এক অভিযোগে অভিযুক্ত। হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের ক্রটি, প্যাথলজির রিপোর্টে ভুল, ওয়ার্ডের ভিতর নোংরা পরিবেশ, ভুল অপারেশনে রুগীর মৃত্যুসহ নানা অভিযোগে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মর্ডান হাসপাতালটি ছিলগালা করে বন্ধ করে দেয়। ক্লিনিকের নাম পরিবর্তনসহ নানা ফন্দিফিকির করে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে হাসপাতালটি বারবার চালু করে। মালিক রবিউলের ক্ষমতার দাপটে বিভিন্ন সময়ে হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও ভুল অপারেশনের কারণে অনেক রুগীর মৃত্যু হলেও কেউ বিচার পাইনি।
উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের সাহেব আলীর পুত্র শরিফুল ইসলাম উপজেলার নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে লিখিত অভিযোগে বলেন, ২৩' সালের ১৩ অক্টোবর ওই ক্লিনিকে তার স্ত্রী মর্জিনা বেগমের সিজার করার সময়ে তার মুত্রনালী ও রক্তসঞ্চালনের কয়েকটি শিরা কেটে তা গোপন করে রাখে। এক সপ্তাহ পর তার স্ত্রীর অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার আব্দুর রব জানান ভুল অপারেশন করে তার শরীরের অনেক ক্ষতি সাধন করা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে রুগীর তিনটি অপারেশন করতে হবে। মর্জিনাকে খুলনা মেডিকেল কলেজে এক মাসের ব্যবধানে তিনটি অপারেশন করে সেখানে হাসপাতালে ৮ মাস চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসা সেবা দিতে রুগীর স্বজনদের জমি জায়গা বিক্রি করে ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, ডাক্তার বলেছেন তার স্ত্রীর এখন জরায়ুর অপারেশন না করলে পুরোপুরি সুস্থ হবে না। বিষয়টি নিয়ে মর্ডান হাসপাতালের মালিক রবিউল ইসলামকে জানালে তিনি তাদেরকে হুমকি দিয়ে ও পুলিশের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছে। অপারেশনের ডাক্তার আব্দুস সামাদ আমাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে বলে বাড়াবাড়ি করলে ওই সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহেনা তার বেয়াই হয় জানিয়ে বলেন, তাদের দিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হবে বলে তাড়িয়ে দিয়েছে।
ক্লিনিক মালিক বরিউল ইসলাম জানান, ওই রোগীর ভুল অপারেশন করা হয়নি। অপারেশর পর রোগী ভালো হয়ে বাড়ি চলে যায়। তাকে কোন হুমকিও দেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে কেশবপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, মর্ডান হাসপাতালের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে বহু অভিযোগের কথা শুনেছি এবং অনেক অভিযোগ পেয়েছি। মর্ডান হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি তদন্ত টিমও গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কবির /জাফরান