.
বেনাপোল বন্দরে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন অত্যাধুনিক কার্গো ভেহিকেল ট্রাক টার্মিনালটি উদ্বোধন হচ্ছে আজ। অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ-পরিবহন ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়েত হোসেন বেলা ১১টায় টার্মিনালটির আনুষ্ঠনিক উদ্বোধন করবেন। পরে তিনি ব্যবসায়ী ও বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ইতোমধ্যে উদ্বোধনের সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। এ টার্মিনালে একসঙ্গে দেড় হাজার পণ্যবাহী ট্রাক পার্কিংসহ নানা সুবিধা পাবেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যেমন গতিশীল হবে, তেমনি রাজস্ব আহরণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে। টার্মিনালটি নির্মাণে কাজ করছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এসএসআর গ্রুপ।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, সরকার ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের পাশে বেনাপোল বন্দরে ৪১ একর জায়গায় বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু করে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল নির্মাণ। এখানে একসঙ্গে ভারতীয় পণ্যবাহী ২ হাজার ট্রাক পার্কিং, ট্রাক চালকদের জন্য অত্যাধুনিক তিনটি টয়লেট কমপ্লেক্স ও থাকা, খাওয়ার সুব্যবস্থায় ব্লাক বিল্ডিং, ফায়ার সার্ভিস, কেমিক্যাল শেড থাকছে। এর ফলে বন্দরের পণ্যজট ও যানজট যেমন মুক্ত হবে তেমনি নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহুগুণ বাড়বে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামসুর রহমান জানান, টার্মিনালটিতে সেবা শুরু হলে বন্দরে চলমান নানা সমস্যার ৯০ শতাংশ সমাধান হবে। বাণিজ্য সুবিধা বাড়াতে রাজস্বও আগামীতে দ্বিগুণ বাড়বে। এটি সরকারের এ যাবৎকালের বেনাপোল বন্দরে সবচেয়ে বড় প্রকল্প।
বেনাপোল আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি জানান, প্রতিবছর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যত বাণিজ্য হয়ে থাকে তার ৮০ শতাংশ হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। ভারত অংশে বেশ আগে তাদের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। তবে চাহিদামতো বেনাপোল বন্দরের অবকাঠামো গড়ে না ওঠায়, স্বাভাবিক বাণিজ্য পরিচালনায় নানাভাবে বিঘœ ঘটত। দিনে ৬ থেকে ৭শ’ ট্রাক পণ্য আমদানির চাহিদা থাকলেও জায়গার অভাবে ৩০০ থেকে ৪০০ ট্রাকের বেশি পণ্য আমদানি সম্ভব হতো না। রাসায়নিক পণ্যাগারের অভাবে প্রায়ই অগ্নিকা-ের ঘটনা ছাড়াও ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছিলেন। এক্ষেত্রে দাবি ছিল জায়গা অধিগ্রহণ করে বন্দর আধুনিকায়নের। বাণিজ্যিক গুরুত্ব বিবেচনা করে অবশেষে সরকার বেনাপোল বন্দরে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল তৈরি করেছেন। টার্মিনালটিতে সেবা শুরু হলে বন্দরে চলমান সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি সাজেদুর রহমান বলেন, প্রতিবছর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ১০ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি বাণিজ্য হয়। বন্দর আধুনিকায়ন হয়েছে, এতে আমরা খুশি। এটির সেবা শুরু হলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য যেমন গতিশীল হবে তেমনি রাজস্ব আহরণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরও বলেন, এর আগেও দুইবার উদ্বোধনের দিন ঠিক হয়েছিল তবে নানান জটিলতায় তা হয়নি। অবশেষে বৃহস্পতিবার উদ্বোধন হচ্ছে এতে ব্যবসায়ীরা সবাই খুশি।
বন্দরের প্রকল্প প্রকৌশলী মশিউর রহমান বলেন, কাজের মান ঠিক রাখতে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন অর্থ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ঢাকায় নিযুক্ত কলকাতা দূতাবাস কর্মকর্তারা টার্মিনাল পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।