বাংলাদেশের র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ইউরোপীয় ইউনিয়নে বিদেশী গোয়েন্দা থেকে প্রশিক্ষণ পেয়েছে বলে জানা যায় আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে।
আল জাজিরার দ্বারা সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে র্যাবের সদস্যরা ইউরোপে ২৫ বারের বেশি সফর করেছেন।এছাড়াও আরো জানা যায় যে, র্যাব (Rapid Action Battalion) সাইবার নিরাপত্তা এবং পর্যবেক্ষণ প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাজ্যে গিয়েছিল, তবে পরে নতুন তথ্য সামনে আসে যে, ২০২২ সালে নেদারল্যান্ডস এবং পোল্যান্ডে র্যাবের নয়জন সদস্য প্রশিক্ষণ এবং সামগ্রী পেয়েছে। ২০১০ সাল থেকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো র্যাবের বিরুদ্ধে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং চরম নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছে।২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে, যুক্তরাষ্ট্র গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি অ্যাক্টের আওতায় র্যাব এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে তার সাতজন কর্মকর্তাকে নিষিদ্ধ করেছিল।
বিদেশী গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ
মার্চ ২০২২ সালে, র্যাবের কর্মকর্তারা পোল্যান্ড সফর করেন যেখানে তারা বিদেশী গোয়েন্দা প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণটি একটি সংস্থা, ইউরোপিয়ান সিকিউরিটি একাডেমি (ESA) প্রদান করেছিল, যা সামরিক কর্মী, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং ব্যক্তিগত সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করে।এরপর সেপ্টেম্বর মাসে, র্যাবের তিনজন সদস্য নেদারল্যান্ডসে গিয়েছিলেন পুলিস কুকুরের প্রি-শিপমেন্ট পরীক্ষা করতে, যা একটি কোম্পানি, পুলিশ ডগ সেন্টার থেকে কেনা হয়েছিল। এটি ছিল তিন বছরে দ্বিতীয়বার যখন র্যাবের কুকুর স্কোয়াড নেদারল্যান্ডসে যাত্রা করে।
ম্যাগনিটস্কি অ্যাক্টের অধীনে নিষেধাজ্ঞা
যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি মানবাধিকার অ্যাকাউন্টেবিলিটি অ্যাক্টের অধীনে, নিষিদ্ধকৃত ব্যক্তি বা সংস্থার মার্কিন সম্পত্তি জব্দ করা হয় এবং মার্কিন কোম্পানি বা ব্যক্তিদের সাথে তাদের বাণিজ্য নিষিদ্ধ করা হয়। আল জাজিরার অনুসন্ধানী ইউনিট (I-Unit) আরো তথ্য সংগ্রহ করেছে যা জানায় যে র্যাবের কর্মকর্তারা ২০১৭ সাল থেকে ইউরোপে ২৫টি সফর করেছেন। এসব সফরের মধ্যে ছিল ব্যাপক পর্যবেক্ষণ সরঞ্জাম ব্যবহারের প্রশিক্ষণ এবং বিভিন্ন সরঞ্জামের প্রি-শিপমেন্ট পরীক্ষা।
যদিও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বহু বছর ধরে র্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে, তথাপি র্যাবের সদস্যরা বিভিন্ন দেশ, যেমন চীন, রাশিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতেও সফর করেছেন।মানবাধিকার বিষয়ক উদ্বেগ এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের লিয়াজন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান জানান যে, র্যাবের সদস্যদের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, তারা র্যাবের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে অবগত, তবে যে কুকুরগুলো কেনা হয়েছিল তা অত্যন্ত বিশেষী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়, তাই এসব সম্পদ রপ্তানি অনুমতির আওতায় পড়ে না।
এছাড়া পোল্যান্ড এবং র্যাবের কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
নাহিদা