ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১

দুই কিলোমিটার কাঁচা সড়কে  মানুষের দুর্ভোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, শ্রীপুর, গাজীপুর

প্রকাশিত: ২১:৪৮, ১২ নভেম্বর ২০২৪

দুই কিলোমিটার কাঁচা সড়কে  মানুষের দুর্ভোগ

.

শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা কাঁচাবাজার সড়কের এইচএম কিন্ডারগার্টেন থেকে টেপিরবাড়ী নোভা পোল্ট্রি মোড় পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা দীর্ঘদিনের। সড়কটি কাঁচা হওয়ায় বৃষ্টি হলেই হাঁটু পরিমাণ কাদা জমে জনদুর্ভোগে পরিণত হয়। শুষ্ক মৌসুমে সড়কে কোনোভাবে চলাচল করতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে হেঁটে চলাচল করাই দুষ্কর। সড়কটি এই এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াতের একমাত্র পথ। বর্ষাকালে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের কষ্টের সীমা থাকে না। প্রায় দুই যুগ কাঁচা সড়কটি পাকা না হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। 
সরেজমিন দেখা গেছে, সফিক মোড় থেকে টেপিরবাড়ী বাজার পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিকল্প কোনো সড়কের ব্যবস্থা না থাকায় হাঁটু সমান কাদা মাড়িয়েই চলাচল করতে হয় ব্যবসায়ী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সবাইকে। বছরের শুষ্ক মৌসুমে সড়কে ধুলাবালি আর বর্ষা মৌসুমে কাদামাটির ভোগান্তির শিকার হতে হয় পথচারীদের। 
সামান্য বৃষ্টি হলেই খানাখন্দে ভরা সড়কে পানি জমে ভোগান্তিতে পড়েন এ সড়কে চলাচলকারী হাজারো যাত্রী। পাশাপাশি বেহাল এই সড়কে প্রায়ই ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। অগ্নি দুর্ঘটনার সময় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসা-যাওয়া অসম্ভব। শ্রীপুরের শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত মাওনা চৌরাস্তাসহ রাজধানী ঢাকা ও ময়মনসিংহ যাতায়াতের একমাত্র সড়ক আশপাশের দুই গ্রামের বাসিন্দাদের। 
টেপিরবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মাওনা চৌরাস্তার কাঁচামাল ব্যবসায়ী সফির উদ্দিন বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের বিভিন্ন গর্তে হাঁটুপানি জমে যায়। ব্যস্ততম সড়কে দিন-রাত ছোটবড় যানবাহন চলাচল করে। 
স্থানীয় বাসিন্দা লিটন আহমেদ বলেন, আমাদের দুঃখ-কষ্ট, দুর্ভোগের কথা কেউ শুনে না। এ এলাকার মানুষের ভোগান্তির কথা বলে বোঝানো যাবে না। নিজ চোখে দেখতে হবে। আমরা ঠিকমতো হাট-বাজারে যেতে পারি না। কৃষিপণ্য সময়মতো বিক্রি করতে পারি না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা কষ্ট করে স্কুল-কলেজে যায়। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে জুতা-স্যান্ডেল হাতে নিয়ে সড়কের কাদামাটি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়। আর কতকাল এ কষ্ট করতে হবে কে জানে। অটোরিক্সা চালক সুমন মিয়া বলেন, খানাখন্দে ভরা সড়কে প্রতিদিনই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। পথচারীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে। 
ব্যবসায়ী মকবুল হোসেন বলেন, বর্ষা মৌসুমে এ সড়কে কোনো অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, ভ্যান-রিকশা আসে না। মোটরসাইকেল, সাইকেলে তো দূরে থাক, খালি পায়ে হেঁটে চলাচল করাও কষ্টসাধ্য। বৃষ্টির দিনে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্সও সড়কে ঢুকতে চায় না। 
মাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নূসরাত, লিমন ও সাইদুল বলেন, প্রতিদিনই আমাদের এ সড়ক দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়। আসা-যাওয়ার সময় যখনই এই পথটুকুর কথা মনে পড়ে, তখনই মনটা খারাপ হয়ে যায়। 
মাওনা চৌরাস্তা ইয়াকুব আলী মাস্টার টাওয়ারের ব্যবসায়ী ইউসুফ বলেন, আমাদের এলাকায় প্রচুর কৃষিপণ্য উৎপাদন হয়। সড়কের বেহাল দশার কারণে কৃষকরা সময়মতো কৃষি ফসল বাজারজাত করতে না পেরে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তারা। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কের পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়। শ্রীপুর উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুছ ছামাদ পত্তনদার বলেন, সড়কটি প্রকল্প আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলেই দরপত্র আহ্বান করা হবে।

×