ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১

জাপার সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৭:২৭, ৯ নভেম্বর ২০২৪

জাপার সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ সম্মেলন।

জাতীয় পার্টির (এ) সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধে কুয়াকাটায় জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী একটি পরিবার। শনিবার দুপুরে কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মো: ওসমান গনি শেখ অভিযোগ করেন, রুহুল আমিন হাওলাদার ক্ষমতার দাপটে মামলা হামলা ও প্রশাসনের মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে তাদের রেকর্ডীয় সাড়ে ২৭ শতাংশ জমি দখলে নেয়।

জমি বিক্রি করতে না চাইলে নানা ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে একটি ভুয়া চুক্তিপত্র সৃষ্টি করে দলিল সম্পাদনে ব্যর্থ হয়ে বিভিন্ন এলাকায় মিথ্যা মামলা দিয়ে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদেন জেল হাজতে পাঠায়। জমির দলিল নিতে প্রাননাশের হুমকি দেয়া হয়। জীবনের ভয়ে আমরা বাড়িঘর ছেড়ে দীর্ঘদিন পালিয়ে রয়েছি।ওসমান গণি আরও বলেন, ‘জে, এল ৩৪নং লতাচাপলী মৌজার এস,এ ১২৯৩ নং খতিয়ানের ৫১৮৫ বাটা ৫৪৭৬ নং দাগের অংশ হইতে সাড়ে ২৭ শতাংশ জমির সাব-কবলা খরিদ মূলে তিনি ও তার ছোট ভাই মোঃ ছোবাহান শেখ, দোজাহান শেখ ও নুর ইসলাম শেখ মালিক। একই দাগ খতিয়ানে আমাদের আরেক ভাই মোঃ শাহ আলম শেখ এর ০৪ (চার) শতক জমি রয়েছে।

জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব, সাবেক মন্ত্রী এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার শাহআলম শেখ এর অংশের ০৪ (চার) শতাংশ জমি ক্রয় করেন। তখন আমাদের জমি আমাদের দখলেই ছিল। কিন্তু আমাদের তফসিল বর্ণিত জমির উপর তার দৃষ্টি পড়ে। পরবর্তীতে তিনি আমাদের জমিও ক্রয় করার প্রস্তাব দেয়। আমরা জমি বিক্রয় করতে অসম্মতি জানাই। যে কারণে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার আওয়ামী স্বৈরশাসনামলে সাংসদ থাকাকালীন ক্ষমতার দাপটে আমি ওসমান গনিসহ আমার অপর তিন ভাইয়ের অংশের সাড়ে ২৩ শতাংশ জমি অবৈধভাবে জবর দখলে নিয়া যায়।

আমরা শতবার চেষ্টা করেও আমাদের জমি উদ্ধার করিতে পারি নাই। আমরা আমাদের জমি উদ্ধারের চেষ্টা করলে তাহার ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আমাদেরকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে হয়রানী করেছে। এমনকি আমাকে ও আমাদের পরিবারকে চিরতরে শেষ করিয়া ফেলার ষড়যন্ত্র করে। একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল হাজত খাটায়। অশেষে ছাত্র জনতার আন্দোলনে ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর তিনি লাপাত্তা হয়ে যায়।’ ভূমি খেকো এই প্রভাবশালী ব্যক্তির অবৈধ দখল থাকা আমাদের জমি উদ্ধারে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

আরেক ভুক্তভোগী মো. সোবহান শেখ বলেন, ‘রুহুল আমিন হাওলাদার সাংসদ ও মন্ত্রী থাকাকালীন কুয়াকাটায় একাধিক জমি দখল করে নিয়ে গেছে। যারাই এর প্রতিবাদ করেছে তারাই মামলা হামলার স্বীকার হয়েছে। তার অত্যাচারে এলাকার অনেক মানুষ নিঃশ্ব হয়ে গেছে। আমরাও সর্বশ্ব হারিয়েছি। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার এ প্রতিবেদককে জানান, তিনি কারো জমি জবর দখল করেননি। উল্টো ওসমান শেখ আমার কাছে বায়না চুক্তির মাধ্যমে জমি বিক্রি করেছে। তিনি জমির টাকাও নিয়েছে। কাগজপত্রে তার মালিকানা সঠিক না থাকায় তিনি জমির দলিল না দিতে পেরে নানা ছলচাতুরীর আশ্রয় নেয়। যার প্রেক্ষিতে আমি মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। ওই জমি নিয়ে সরকারের সাথে মামলা চলমান রয়েছে। সাবেক মন্ত্রী রুহুল আমিন হাওলাদার দাবী করেন, বর্তমানে তার বায়না চুক্তির জমিতে ওসমান শেখ নিয়মবহির্ভূত ভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, ওসমান শেখ ছাড়া অন্য ওয়ারিশরা তার কাছে সাব কবলা দলিল মুলে বিক্রি করেছে। এখন তারাও বলছে আমরা দলিল দেইনি। যা সম্পুর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। আপনারা কাগজপত্র পর্যালোচনা করলে যার সত্যতা বেরিয়ে আসবে। তার দাবী এরা প্রতারক।

রিয়াদ

×