আরিচা-কাজিরহাট রুটে ফেরি পারাপার বন্ধ
স্পর্শকাতর মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথে সৃষ্ট ডুবোচরের কারনে ফেরিসহ ভারি নৌযান চলাচলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং ইউনিট গত তিন মাস যাবৎ এরুটের বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজিং কার্যক্রম চালালেও তেমন কোন উন্নতি হয়নি। তাদের দাবি নদীতে দ্রুত পানি হ্রাস, তলদেশে মাত্রাতিরিক্ত স্রোত ও মূল চ্যানেলে সৃষ্ট ডুবোচরের কারনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চলমান ড্রেজিংয়ের ফলে এ রুটে ফেরি চলাচলের জন্য পর্যপ্ত নাব্যতা রয়েছে।
অপরদিকে, ফেরি কর্তৃপক্ষ বলছেন ভিন্ন কথা। এদের দাবি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরি চলাচলের জন্য চ্যানেলে নুন্যতম ৯/১০ ফুট গভীরতার প্রয়োজন। আরিচা ঘাটের কাছে প্রায় দেড় কিলোমিটার নৌপথে গভীরতা রয়েছে ৮ ফুটেরও নিচে। এতে অর্ধ লোড নিয়েও কোন ফেরি চলা সম্ভব না। শুক্রবার সকালেও আরিচা থেকে কাজিরহাটের উদ্দেশ্যে অর্ধলোড নিয়ে রওয়ানা দেয়া ফেরি ধানশিড়ি চ্যানেলের মুখে ডুবোচরে প্রায় তিন ঘন্টা আটকে থাকে।
এদিকে, উল্লেখিত নৌরুটে ফেরি চলাচল বিঘ্ন ঘটায় উভয় ঘাট এলাকায় পারের অপেক্ষায় আটকে পড়ছে অসংখ্য যানবাহন। যমুনা ব্রিজ এড়িয়ে এ পথে আসা এসকল যানবাহন মালিক-শ্রমিকরা পড়েছেন বিপাকে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা শেষে অনেকেই বিকল্প পথে গন্তব্যে রওনা হলেও শুক্রবার সন্ধার পর আরিচা ঘাটে ফেরি পারের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ লাইন।
ফেরি সেক্টর বিআইডব্লিউটিসি’র আরিচা আঞ্চলিক ম্যানেজার আবু আব্দুল্লাহ জনকন্ঠকে বলেন, এ পথে বর্তমানে সংস্থার ৪টি রো-রো ফেরি মোতায়েন রয়েছে। নব্যতা সঙ্কটে কোন ফেরি স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে পারছে না। প্রায়শই বন্ধ থাকছে এরুটের ফেরি সার্ভিস। ফেরি পার হতে আসা বিভিন্ন ধরনের যানবাহন যাত্রী ও শ্রমিকরা ফেরি চালু-বন্ধের দোলা চলে পড়ছেন বিপাকে।
ঘাট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছরের ১৭ জুন থেকে এ নৌপথের নাব্যতা ঠিক রাখতে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু হয়। আরিচা ঘাটের কাছে মূল চ্যানেলসহ কানাইদিয়া ও মোল্লারচর এলাকায় বিআইডব্লিউটি’এর নিজস্ব ৯টি ড্রেজার পলি অপসারন কাজে নিয়োজিত রয়েছে। পক্ষকাল যাবৎ নদীতে অস্বাভাবিক ভাবে পানি কমতে থাকায় সমস্যা ক্রমেই যেন প্রকট হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটি’র ড্রেজিং ইউনিটের আরিচা অঞ্চলের প্রকৌশলী ওসমান গনী জানান, চলতি বছরে আরিচা-কাজিরহাটসহ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ৩৮ লাখ ঘণমিটার পলি অপসারনের লক্ষমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ২৪০ ফুট প্রস্থ বেসিং ও ১০ ফুট গভীরতার চ্যানেল তৈরীর জোর চেষ্টা চলছে। সহশাই অচলাবস্থার উন্নত হবে বলে তিনি দাবি করেন।
আরিচা ঘাটে ফেরি পারের অপেক্ষায় থাকা পণ্যবাহী ট্রাক চালক নুরুউাদ্দন জানান, চট্রগ্রাম থেকে মাল বোঝাই ট্রাকটি নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে আরিচা ঘাটে পৌছেছি। ব্রিজ এরিয়ে বিকল্প ও সহজ যাতায়াতের জন্য এরুটে ডুকে ফেসে গেছি। রাত-দিন অপেক্ষা শেষে এখনো ফেরি চালুর অপেক্ষা গুনছি।
অপর চালক সাঈম মিয়া জানান, পারের অপেক্ষায় ঘাটে বসে আহার নিদ্রায় অতিরিক্ত অর্থ অপচয় হচ্ছে। সময়মতো গন্তব্যে পৌছতে না পারলে কোম্পানী আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। এখনো অপেক্ষায় আছি কখন ফেরি ছাড়ে।
তাজিন