ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

উত্তরের জনপদ ঠাকুরগাঁওয়ে কুয়াশায় ভরা হেমন্তে চলছে শীত-গরমের খুনসুটি

এস, এম জসিম উদ্দিন

প্রকাশিত: ১৯:১০, ৮ নভেম্বর ২০২৪

উত্তরের জনপদ ঠাকুরগাঁওয়ে কুয়াশায় ভরা হেমন্তে চলছে শীত-গরমের খুনসুটি

দেশের উত্তর জনপদের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে ইতিমধ্যেই মৌসুমী বায়ু নিয়েছে বিদায়। সারদিনের ভ্যাপসা গরম শেষে ভোর রাত থেকে শুরু হচ্ছে মৃদু বাতাস আর সাথে হালকা কুয়াশা। ভোরে টিপটিপ বৃষ্টির মতো কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের আগাম বার্তা। কার্তিকেই গুটি গুটি পায়ে জেলার মানুষের মাঝে প্রায় এসে গেছে শীত।  
এইসময় ঠাকুরগাঁওসহ অন্যান্য জেলায় ভোরে কুয়াশায় লাল সূর্য উঠার দৃশ্য আর শীত-গরমের মিষ্টি হাওয়া মন ভুলিয়ে দেওয়ার আবহাওয়া বিরাজ করছে। ভোররাতেটিনের চালের টিপ টিপ শিশিরের শব্দ, কুয়াশায় ঢাকা ধান ক্ষেত, ঘাড়ে লাঙ্গল-জোয়াল আর হাতে গরুজোড়া নিয়ে যাওয়া, দূর্বাঘাষের ডগায় মুক্তা দানার মত শিশির বিন্দু, পাখির ডানায় সোনা রোদের ঝলকানি আর সকাল বেলার ভেজা শিউলি ফুলের গন্ধ মাখা ফুল কুড়ানি শিশুদের জেটলার দুশ্য বলে দিচ্ছে ঋতুর রাণী হেমন্ত এসেছে। নতুন ধানের পিঠা-পুলিতে রসনাবিলাসি কৃষকের মন এখন উদ্দেলীত। হিমালয় পাদদেশ উত্তরের এই জনপদে এখন শীত-গরমের খুনশুটি। আর সেটিকে যেন উপভোগও করছেন এলাকার মানুষজন।
শহরের শান্তিনগর মহল্লার বাসিন্দা তন্ময় ও তার বন্ধু ইমন পেশার কারণে থাকে ঢাকায়। সে বাড়িতে বেড়াতে এসে সকালে বের হয়েছে কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে লালসূর্য্যউদয় দৃশ্য দেখার জন্য। তারা জানায়, বছরের এই হেমন্তকাল তাদের কাছে সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য সময়। এই সময় দিনে হাল্কা-পাতলা গরম অনুভব হলেও রাতে থাকছে না শীত না গরম। এই আবহাওয়ায় সকল মানুষের কাছেই উপভোগ্য সময়।
বিশিষ্ট সাহিত্যিক রাজা সহিদুল আসলাম ও অপর এক গৃহীনী হোসনে আরা বেগম বলেন, হিমালয়ের খুব নিকটবর্তী হওয়ায় ঠাকুরগাঁও জেলায় শীতের আমেজ নেমে আসে বেশ আগে ভাগেই। সারাদিনের ভ্যাপসা গরমের পর ভোর রাতে প্রকৃতিতে শুরু হয়েছে শীতের হিমেল পরশের গা শির শিরে বাতাস। অপরূপ হেমন্তের সকাল মানুষের মনে জাগিয়েছে ফুরফুরে আমেজ। কুয়াশার সকালে শিশির সিক্ত মাটিতে ঝড়া শিউলী ফুল আর ঘাসের ডগার শিশির বিন্দু ঝিক মিকিয়ে উঠছে বার বার। দেখে যেন মন মুদ্ধ হয়ে উঠে। হালকা কুয়াশায় ছেয়ে থাকছে রাস্ত-ঘাট। মানুষে মানুষে ঐক্যতান সৃষ্টির জন্য নবান্ন আসে এই হেমন্তেই। নানা রঙের ফুলে ফুলে ভরে গেছে এক অপরূপ সৌন্দর্যে। প্রকৃতি প্রেমী শিশু-বৃদ্ধরাও এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসছেন অনেকেই
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জালাল উদ-দীন বলেন, বাঙ্গালীর জীবনে একটি আকর্ষনীয় ঋতু হেমন্ত। ঐর্ষয্য, প্রাচুর্য আর সৌন্দর্যের ঋতু হেমন্ত। উৎসব আর আনন্দে হারিয়ে যাবার ঋতু এটা। নতুন ধানের চালে পিঠা-পুলি যেন আলাদা সুখের আস্তরণ। শিশিরের শব্দ আর ধান কাটার সৌন্দর্য নিয়ে আসে হেমন্ত। অথচ সৌন্দর্যকে শক্তিতে রুপান্তরিত করবার একটা ঘারতি যেন আমরা ধারন করে বেড়াই। আর এই কারণেই আলাদা করে হেমন্তকে উদযাপন করা জরুরী।
হেমন্তের অপরূপ এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, উৎসব আর মিলন মেলায় মানুষে মানুষে সৃষ্টি হোক হৃদয়ের বন্ধন এই প্রত্যাশা সকলের ।

×