ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১৮:২৩, ৮ নভেম্বর ২০২৪

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের বিক্ষোভ

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘকে (ইসকন) জঙ্গি সংগঠন উল্লেখ করে বাংলাদেশে এর কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি তুলেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ইসকন সনাতনের কোনো ধর্মীয় সংগঠন নয়, এটি ইহুদি ও খ্রিস্টানদের লালিত পালিত আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজত নেতারা। শুক্রবার জুমার নামাজের পর চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের নেতারা।

সেখানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর হেফাজতে ইসলামের আহ্বায়ক মাওলানা তাজুল ইসলাম, হেফাজত নেতা মাওলানা নুরনবী, কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা কামরুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা আনোয়ার রব্বানিসহ সংগঠনটির বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ। এরপর নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করেন।

ইসকন সম্পর্কে হেফাজত নেতারা বলেন, ইসকন আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন। বিভিন্ন দেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইসকন সনাতনের কোনো ধর্মীয় সংগঠন নয়। ইসকন একটি ইহুদি ও খ্রিস্টানদের লালিত পালিত জঙ্গি সংগঠন। হিন্দুদের ইসকনের ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নেতারা বলেন, সনাতন ভাইয়ের ইসকনের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতিত হয়েছে।

হেফাজত নেতারা বলেন, বাংলাদেশে মুসলিমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখে কিন্তু ইসকন জঙ্গি সংগঠন। হাজারি গলিতে মুসলিমের দোকানে হামলা করে তারা প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশে ইসকন সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটাতে চায়। সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে বাংলাদেশে ঠাঁই দেব না। সেনা ও পুলিশের ওপর হামলা করেছে ইসকন। সাধারণ পথচারী ও সেনাবাহিনী রেহাই পাচ্ছে না তাদের কাছ থেকে। চট্টগ্রাম থেকে প্রমাণিত হয়েছে ইসকন একটি জঙ্গি সংগঠন। তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হয়েছে, এখন ইসকনের আড়ালে ও হিন্দুত্ববাদীদের আড়ালে ইসকন নামক সংগঠন জঙ্গি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। অনতিবিলম্বে ছাত্রলীগের মত ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। যদি ইসকনকে নিষিদ্ধ করা না হয় তাহলে হেফাজতে ইসলাম তীব্র থেকে তীব্রতর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
নেতারা আরও বলেন, ইসকনের বড় আখড়া প্রবর্তক মোড়ে, তাদের আস্তানা সেখানে। তারা সেখান থেকেই অপকর্ম চালায়।

আমরা সেখান থেকে ইসকনকে উচ্ছেদ করব। সেনাবাহিনী ও পুলিশ এবং মুসলিমের দোকানের হামলা করেছে ইসকন। সরকারকে আহ্বান জানাব, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ একেকটি রূপ নিয়ে আসে, এখন তারা ইসকন রূপ নিয়ে এসেছে। তাদের শক্তহাতে প্রতিহত করুন। শক্তহাতে প্রতিহত করে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বক্তারা বলেন, হেফাজত ইসলাম ধর্মীয় আধ্যাত্মিক সংগঠন। আমাদের কাজ মুসলিম সমাজে করণীয় কী, তা অবগত করা। সেই দায়বদ্ধতা থেকে আমরা সুশৃঙ্খলা শান্তিপূর্ণ সমাজ কামনা করি। যখন কোনো মুসলিম আক্রান্ত হয় তখন দায়বদ্ধতা থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করি। আমরা স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই যে, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাজ চাই। বিগত ১৬ বছর একটি ফ্যাসিবাদী ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি ছিল। আলেম ওলামা, ছাত্র-জনতা পেশাজীবীরা কাঁেধ কাঁধে মিলিয়ে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা নসাৎ করে দিয়েছে। আজ আমরা মুক্ত বাতাসে কথা বলার অধিকার যেন হারিয়ে না ফেলি। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে যেমন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, সেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে। কোনো উসকানিতে যেন আমাদের ঐক্য বিনষ্ট না হয়।

ষড়যন্ত্র হচ্ছে ভেতর থেকে, বাইরে থেকে উল্লেখ করে হেফাজত নেতারা বলেন, সতর্ক থাকতে হবে। আমাদের প্রত্যেকের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত চাহিদা আছে। বিভিন্ন অধিকার চাইতে গিয়ে আমাদের ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য যেন বিনষ্ট না হয়। ফ্যাসিবাদের পতন থেকে যত ক্রাইসিস এসেছে সবগুলোর পেছনে আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা জড়িত।

রিয়াদ

×