ইউপি সদস্য মোশাহিদ আলম রানু।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে সন্ত্রাসী হামলা, মারামারি ও যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনসহ একাধিক মামলার আসামি বহুল আলোচিত ইউপি সদস্য মোশাহিদ আলম রানুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে যাদুকাটা নদীপাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, দোকানঘর আগুনে পোড়ানো এবং মারামারির ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রানুকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন। এর আগে গত বছরের আগস্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে যাদুকাটা নদী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।
মোশাহিদ আলম রানুর বিরুদ্ধে উপজেলার অন্যতম বালুমহাল যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, যাদুকাটায় অবৈধ ড্রেজার ও শেইভ মেশিন পরিচালনা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের নেতাদের উপর হামলা, নদীতীরবর্তী মানুষের জমি দখলসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে।
দোকানঘর পোড়ানো ও মারামারি মামলার বাদি আব্দুল কাইযুম বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে রানু ও তার সহযোগিরা যাদুকাটা নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন করছে। রানু বাহিনীর এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডে স্থানীয় অনেকে তাদের বসতভিটে হারায়। তার অবৈধ ও অন্যায় কাজের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে এলাকায় একাধিকবার মানববন্ধন করে ভুক্তভোগিরা। এসব প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আমার ভাগ্না শাহারুলও সোচ্চার ছিল। এর জেরে মাস দুয়েক আগে রানু ও তার সহযোগিরা শাহারুলের বসতভিটা লাগোয়া দোকানঘরটি আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে আমিসহ চারজনের উপর দেশিয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করে সে।’
এদিকে চলতি বছরের আগস্টের ৪ তারিখে উপজেলার বাদাঘাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলার ঘটনায় ছাত্র সমন্বয়ক নেতা আজিজুর রহমান বাদি হয়ে তাহিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলার এজহার নামীয় আসামি মোশাহিদ আলম রানু। অন্যদিকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে যাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনে বাধা দিতে গেলে জয়দর মিয়া নামে একজনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে সে। এঘটনায় জয়দর মিয়ার ছেলে সুফিয়ান রানুকে প্রধান আসামি করে থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
যাদুকাটা নদী পাড়ে রানু বাহিনীর সীমাহীন অত্যাচারে নির্যাতিতরা বলেন, ‘মোশাহিদ আলম রানু আগেও কয়েকবার জেল খেটেছে। কিন্তু কিছুদিন পর জেল থেকে বেরিয়ে ফের অবৈধভাবে নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলনসহ তার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাতে থাকে। শুধু রানুকে গ্রেপ্তার করলে হবেনা, তাকে যারা মদদ জোগাচ্ছে তাদেরকেও তদন্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী লোকজন।’
নুসরাত