ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

দাউদকান্দিতে রাতের আধাঁরে কাটা হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডিভাইডার

নিজস্ব সংবাদদাতা,দাউদকান্দি

প্রকাশিত: ১৮:২১, ৭ নভেম্বর ২০২৪

দাউদকান্দিতে রাতের আধাঁরে কাটা হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডিভাইডার

ঢাকা—চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়ক। প্রতিনিয়তই মহাসড়কটির দাউদকান্দি অংশে ঘটে ছোট—বড় দুর্ঘটনা। প্রাণহানির ঘটনাও নেহাত কম নয়। এরই মধ্যে রাতের আঁধারে সড়কের মাঝখানে অবৈধভাবে কেটে দেয়া হচ্ছে ডিভাইডার। কাটা ডিভাইডারে পার হচ্ছে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজিসহ ছোট যানবাহনসহ পথচারী। এতে মহাসড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা। সঙ্গে বেড়ে চলেছে প্রাণের ঝুঁকি।মহাসড়কটির দাউদকান্দি অংশে প্রতিনিয়তই ঘটে থাকে দুর্ঘটনা। গত এক বছরে এই মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ঝরে গেছে প্রায় অর্ধশতাধিক প্রাণ। বিগত সরকারের সময় মহাসড়কে অবৈধ থ্রি হুইলার বন্ধ থাকলেও আগষ্টের পর থেকে অবাধে চলছে।

চার লেন সড়কের বেশিরভাগ কাটা ডিভাইডার ঢালাই ব্লক এবং আরসিসি দেয়াল তুলে বন্ধ করে দেয় সড়ক বিভাগ। বন্ধ করার পরও কে বা কারা রাতের অন্ধকারে অবৈধভাবে সেই ডিভাইডারগুলো আবার ভেঙ্গে ফেলছেন। এতে সড়ক পারাপার হতে গিয়ে বিভিন্ন সময় ঘটছে দুর্ঘটনা।জানা যায়, মহাসড়কের গৌরীপুর অংশে ঢাকামুখী লেনে দ্রুত গতির এবং লোকালের জন্য ডিভাইডারের মাধ্যমে ভাগ করা হয়। মাঝখানের ডিভাইডার কেটে তৈরি করা হয়েছে সড়ক পারাপারের ব্যবস্থা। সড়ক বিভাগ এসব কাটা ডিভাইডার মেরামতের মাধ্যমে বন্ধ করে দিলেও কয়েক দিনের মধ্যেই রাতের আঁধারে আবারও সেগুলো কোথাও কেটে ফেলছে, আবার কোথাও সরিয়ে ফেলেছে অজ্ঞাত একটি চক্র। সড়কটির বারপাড়া এবং হাসানপুর কলেজের সামনের অটোরিক্সা ও সিএনজি পারাপারের জন্য ডিভাইডারের ব্লকগুলো খুলে ফেলেছে। এসব অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই সড়ক পারাপার হচ্ছে পথচারীরা । এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট—বড় দুর্ঘটনা। সড়কে ঝরে পড়ে তাজা প্রাণ।

স্থানীয় অনেকেই জানান, মহাসড়কে চলাচলকারী ছোট পরিবহনগুলো ইউটার্ন করতে গেলে অনেক পথ যেতে হয়। অনেকেই নিজেদের প্রয়োজনে রাতের আঁধারে ডিভাইডার কাটছেন। অনেকবারই সেসব বন্ধ করেছে সড়ক বিভাগ। কিন্তু বন্ধ করার কয়েক দিন পর দেখা যায় ডিভাইডারগুলো আবারও উধাও। হয় কয়েক দিন পর গাড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলেছেন, না হয় রাতে ঢালাই ভেঙ্গে ফেলছে, আবার কোথাও খুলে নিয়ে গেছেন। প্রথমে ছোট গাড়ি পারাপারের রাস্তা করা হলেও তা আস্তে আস্তে ভেঙে ভেঙে বড় হয়। এসব ভাঙা ডিভাইডারে পারাপারের সময় বড় গাড়িও না দেখে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এতে দুর্ঘটনাও বেশি ঘটে। মাঝে মাঝে বন্ধ করে বেশিদিন রক্ষা করা যাচ্ছে না ডিভাইডারগুলো। তাই ডিভাইডারের কাটা অংশগুলো ঢালাইয়ের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা গেলে আর কাটতে পারবে না কেউ। এতে কমে আসবে দুর্ঘটনাও।

নিরাপদ সড়ক চাই(নিসচা) দাউদকান্দি শাখার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, মহাসড়কটির ব্যস্ততম স্থান হলো গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড। ঢাকামুখী সরাসরি লেনে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করাতে ডিভাইডার ভাঙ্গা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে পথচারী ও যাত্রী পারাপারে বড় ধরনের দূর্ঘটনার সম্ভবনা রয়েছে। দুর্ঘটনা রোধে দ্রুত ভাঙ্গা অংশ মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি মোঃ আবু ওবায়েদ বলেন, কয়েকদিন আগে আমি এখানে যোগদান করেছি মাত্র। খোজ খবর নিয়ে সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় করে দুর্ঘটনারোধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আবু সালেহ বলেন, ‘মহাসড়কটির দাউদকান্দি অংশে দুর্ঘটনা রোধে ডিভাইডারের কাটা অংশগুলো অনেকবারই বন্ধ করা হয়েছে। আর দুর্ঘটনা হ্রাস করতে ডিভাইডার ও ফুটওভার ব্রীজ করা হয়েছে। কিন্তু জনসাধারণ সেটা ব্যবহার করতেছেনা, উল্টো ভেঙ্গে ফেলছে বা নষ্ট করছে। এখানে যারা ব্যাবহারকারী, জনপ্রতিনিধি, হাইওয়ে পুলিশ ও সাংবাদিকদের প্রতি আহবান রাখছি যাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার জন্য সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে।

রাজু

×