বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্র থেকে বয়ে গেছে তুলাতলী নদী। তুলাতলী নদীর সঙ্গে এই উপজেলার শ্রীমন্ত, কারখানা, তেতুলিয়া, বিষখালী, পায়রা,পান্ডব, গোমা, রাঙ্গাবালিয়া ও খয়রাবাদ নদীর প্রতিদিন জোয়ার ভাটা চলে। এই তুলাতলী নদীর কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বাকেরগঞ্জ বন্দর উপজেলা শহর।
সরেজমিনে দেখা যায়, বাকেরগঞ্জ বন্দরের পুরাতন লঞ্চঘাট টার্মিনালের পাশে তুলাতলী নদীতে পলিথিন, আশেপাশের বাড়ি ঘরের ময়লা-আবর্জনা, বন্দরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে তুলে ধরে নদী। ঔষধের বোতল, প্যাক, সুইসহ মেয়াদ উত্তীর্ণ ঔষধ-বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এবং পৌর এলাকার অতিরিক্ত সব বর্জ্যই লঞ্চঘাট টার্মিনালের পাশে নদীতে ফেলা হয়। এসব বর্জ্যে তুলাতলী নদী দূষণের পাশাপাশি বায়ু দূষণও হচ্ছে। এবং এই দূষণ তুলাতলী নদী থেকে শুরু করে পুরো উপজেলার বিভিন্ন নদীতে ছড়িয়ে পড়ছে। এক সময় তুলাতলী নদীই ছিল বাকেরগঞ্জের প্রাণ। এ নদী দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মালামাল আনায়ন করা হত। তবে দিন দিন নদীটি নাব্যতা হারাচ্ছে। খুব বেশি দিন আগের কথা নয়, তখন এ নদীতে সারা বছর মানুষ গোসল, নামাজের জন্য ওজু, নৌকা চালাচল করতো। এখনো বন্দরের শত শত পরিবারের লোকজন নদীতে গোসল করেন। একসময় নদীতে মাছ পাওয়া যেত অনেক। সেই টলমল পানি এখন নিক্ষিপ্ত বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মূলত জনসাধারণের অসচেতনতার জন্যই প্রতিনিয়ত টার্মিনালের পাশ থেকেই নিক্ষেপ করেন বর্জ্য। প্রচুর পরিমাণে বর্জ্য ফেলার কারণে নদীর পানি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এখন নদীর পানি দূষিত হওয়ার কারণে মাছ পাওয়া যায় না। বরং উল্টো স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দিন কাটায় নদীপাড়ে বসবাসরত হাজারো মানুষ। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের অবহেলা আর গাফিলতির কারণে নদীতে দূষণ ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, আবর্জনা ফেলার জন্য নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে। এবং বন্দরে বিভিন্ন স্থানে প্লাস্টিকের ড্রাম রাখা হয়েছে ময়লা ফালানোর জন্য। তবে কে বা কাহারা রাতের অন্ধকারে নদীতে ময়লা, আবর্জনা ফেলে তা আমাদের জানা নেই। আমরাও উদ্যোগ গ্রহণ করব নদীতে যেন ময়লা ফেলানো না হয়। নদী দূষণমুক্ত রাখতে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে।
রাজু