ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব অলিগলি

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা

প্রকাশিত: ১৬:৪৪, ৭ নভেম্বর ২০২৪

নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব অলিগলি

নিষিদ্ধ পলিথিনে সয়লাব তালতলী উপজেলার অলিগলি। তালতলীর ফকিরহাট ৎস্য অবতরণ কেন্দ্র যেন পলিথিনের আতুরঘর। ব্যবহার বন্ধে সরকারী নির্দেশনা থাকলেও প্রশাসন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না এমন অভিযোগ তালতলী ফকিরহাট ৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এলাকার বাসিন্দাদের।  তালতলী উপজেলার ফকিরহাট ৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার টাকার পলিথিন ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে  পরেছে।

আরো অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা প্রশাসন পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই ফকিরহাট বাজারের ব্যবসায়ীরা এমন কাজ করছেন। দ্রুত পলিথিন বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা।

জানাগেছে, গত পয়েলা অক্টোবর পরিবেশ মন্ত্রনালয় পলিথিন বন্ধের ঘোষনা দেয়। কিন্তু ওই ঘোষনার পরও বন্ধ হয়নি আমতলী-তালতলী উপজেলার পলিথিন ব্যবহার। দুই উপজেলায় প্রতিদিন অন্তত লক্ষ টাকার পলিথিন ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে তালতলী উপজেলার ফকিরহাট ৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রতিদিন অন্তত ২৫ হাজার টাকার পলিথিন ব্যবহৃত হচ্ছে। ওই পলিথিনে মাছ প্যাকেটজাত করে ব্যবসায়ীরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করছেন।

এতে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মুখে পরবে বলে আশঙ্কা করছেন পরিবেশ কর্মী আরিফুর রহমান। অভিযোগ রয়েছে উপজেলা প্রশাসন পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই তারা পলিথিন ব্যবহার করছেন। প্রশাসন মাছ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন না করায় তারা অবাধে পলিথিনের ব্যবহার করছেন।  

তালতলী ফকিরহাট ৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, ফকিরহাট ৎস্য বাজারে প্রতিদিন অন্তত ২৫ হাজার টাকার পলিথিন ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রশাসনের লোকজন এসে ঘুড়ে যায় কিন্তু তারা ব্যবস্থা নেয় না।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, তালতলী উপজেলার ফকিরহাট ৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছ ব্যবসায়ীরা পলিথিনে মাছ প্যাকেটজাত করছেন। শারি শারি পড়ে আছে পলিথিনের প্যাকেটজাত মাছের বাক্স। আবার পরিত্যাক্ত পলিথিন বাজারের পাশে রেখে দিয়েছেন তারা। এছাড়া আমতলী- তালতলীর হাট- বাজারে অবাধে পলিথিন বিক্রি হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ফকিরহাট ৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার টাকার পলিথিন ব্যবহৃত হয়। পলিথিনের খবর প্রশাসনও জানে।  

তালতলী ফকিরহাট ৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সোহরাব সরদার বলেন, সরকার পলিথিন ঢাকায় বন্ধ করলেও আমাদের অঞ্চলে বন্ধ করেনি। তাই পলিথিনে মাছ প্যাকেটজাত করছি। তিনি আরো বলেন, পলিথিন ব্যবহার করলেও প্রশাসনতো কিছুই বলে না।

আমতলী নাগরিক কমিটির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মোঃ আবুল হোসেন বিশ্বাস বলেন, সরকার পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করলেও মানছেন না ব্যবসায়ীরা। অবাধে পলিথিন বিক্রি ব্যবহৃত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সরকারের কাছে দাবী যারা পলিথিন ৎপাদন করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার।

ৎপাদন বন্ধ হলেই পলিথিন ব্যবহার অটোমেটিকলি বন্ধ হয়ে যাবে। তিনি সরকারের কাছে আরো দাবী জানান দ্রুত পলিথিনের বিকল্প কিছু তৈরি করে দেয়ার। 

তালতলীর ফকিরহাট ৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মজিবর ফরাজী বলেন, মাছ প্যাকেটজাত করতে পলিথিন প্রয়োজন। তালতলী বরগুনা থেকে পলিথিন এনে মাছ প্যাকেটজাত করা হয়। প্যাকেটজাত মাছ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি করা হচ্ছে।

তবে নিষিদ্ধ পলিথিন কেন ব্যবহার করছেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকার পলিথিনের বিকল্প কিছু তৈরি করলেই ব্যবহার  বন্ধ করে দেব।

তালতলী থানার ওসি মোঃ কালাম খাঁন বলেন, উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ উম্মে সালমা বলেন, দ্রুত অভিযান পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। কেউ পলিথিন ব্যবহার করতে পারবে না।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন , পলিথিন বন্ধে অভিযান অব্যহত আছে। গত বুধবার অভিযান চালিয়ে সাত জাহার টাকা জরিমানা করেছি। তিনি আরো বলেন, যে কোন মুল্যেই আমতলীতে পলিথিন বন্ধ করা হবে।    

×