ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ পৌষ ১৪৩১

তাড়াতে গিয়ে জীবন হারাচ্ছেন কৃষক

বন্যহাতির অব্যাহত তাণ্ডবে ফসলের খেত সাবাড়

সংবাদদাতা, নালিতাবাড়ী, শেরপুর

প্রকাশিত: ০০:৩৪, ৭ নভেম্বর ২০২৪

বন্যহাতির অব্যাহত তাণ্ডবে ফসলের খেত সাবাড়

বন্যহাতি

নালিতাবাড়ী উপজেলায় প্রায় প্রতি রাতেই বন্যহাতির দল তাণ্ডব চালিয়ে খেয়ে সাবার করছে কৃষকের কষ্টার্জিত সোনার ফসল আধাপাকা আমন ধানের ক্ষেত। বর্তমানে বন্যহাতির ভয়ে নিজেদের খোরাকির ধান যোগান দিতে ও সংগ্রহ করতে এলাকার কৃষকরা আধাপাকা ধান কাটতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি চেল্লাখালী নদীর পাহাড়ি ঢলের পানিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর এবার গারো পাহাড়ে বন্যহাতি অব্যাহতভাবে তা-ব চালিয়ে ফসল খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করছে। এতে কৃষক দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। 
মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বাতকুচি গ্রামের সাধুর খোল নামের এক পাহাড়ি গোপে হাতিরদল নেমে এসে কৃষক সাহেদ আলী, হযরত আলী, সাজিরন বেগম, আবু সামা, আবুবকর, মজিবর রহমান, শামছুল হক, উমর আলী ও আব্দুল কুদ্দুসেরসহ প্রায় ১০ একর জমির ধানক্ষেত খেয়ে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে বিনষ্ট করেছে। এতে কৃষকের পড়েছে মাথায় হাত। তারা হাতির অত্যাচারে ফসল বিনষ্টের স্থায়ী সমাধান দাবি করেন। 
এদিকে, কৃষকের আমন ফসল রক্ষা করতে পাতানো জেনারেটরের তারে জড়িয়ে সম্প্রতি মারা গেছে একটি বন্যহাতি। এই হাতি তাড়ানো দেখতে গিয়ে বন্যহাতি হত্যা মামলায় হয়রানির শিকার হয়ে পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি টিলাপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম (৪০) নামের নিরীহ এক ভ্যানচালককে বন বিভাগের লোকজন জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের লোকজন। পরিবারের সদস্যরা জানান ভুক্তভোগী শহিদুলের বাবা ছোরহাব আলীকেও বিগত ২০০৮ সালে একদল বন্যহাতি শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে আছাড় মেরে ও পা দিয়ে মাড়িয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে।

শুধু শহিদুল ইসলাম নন এলাকার আরও ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও অনেক দরিদ্র অসহায় নিরীহ মানুষকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। মামলার ভয়ে গ্রামের কৃষকরা বাড়ি ঘরে থাকছেন না। আর এই সুযোগে বিনা বাধায় কৃষকের সোনার ফসল খেয়ে শেষ করছে বন্যহাতির পাল।
ময়মনসিংহ বনবিভাগের মধুটিলা ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, বন্যহাতির অত্যাচারের শুরুর দিকে কৃষকরা কোনো প্রকার ক্ষতিপূরণ পেতেন না। বর্তমানে বন্যহাতি দ্বারা নিহতের পরিবার সরকারিভাবে ৩ লাখ, আহত ব্যক্তি ১ লাখ ও ফসলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা। 
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা বলেন, বন্যহাতি দ্বারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা প্রস্তুত করে দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

×