চলনবিল অধ্যুষিত উপজেলা গুলোতে ভোর ও সন্ধ্যা আসতেই কুয়াশা পড়ছে। গত সপ্তাহ এ কুয়াশার মধ্যে দিয়েই শীতের আগমন লক্ষ করা যাচ্ছে। দিন যতই যাচ্ছে শীত ততই বড়ছে। আর এই শীতের সঙ্গে সঙ্গে চলছে চিতই আর ভাপা পিঠা বিক্রির ধুম।
চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, গরম গরম ভাপা পিঠা নামছে মাটির চুলা থেকে। পিঠাপ্রেমী ক্রেতাদের দেখা যাচ্ছে পিঠা কিনছেন। কেউ নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। কেউ আবার দাঁড়িয়ে খাচ্ছেন।
এক চুলায় ভাপাপিঠা, অন্যটিতে চিতই, অন্যকোনোটিতে সিদ্ধ ডিম বা আরেক পিঠা। শীত যতই বাড়ছে এসব পিঠাপুলির দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে। দোকানগুলোয় পিঠার পাশাপাশি থাকছে হরেক রকম ভর্তা।
পাবনার চাটমোহরে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সরজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিনই ভোর ও বিকাল থেকেই পিঠা বিক্রির ধুম পড়ে উপজেলা সদরের রাস্তার মোড়ে-মোড়ে অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা দোকানগুলোয়। সন্ধ্যা হলেই বেড়ে যায় ক্রেতার সমাগম, যা অনেক রাত পর্যন্ত চলতে থাকে বিক্রি।
এসব পিঠার দোকানে নানা বয়সী মানুষ পিঠা খেতে আসেন। রসুন-মরিচবাটা, ধনিয়াপাতা বাটা, শুঁটকি, কালোজিরা, সর্ষে ভর্তাসহ নানা রকম উপকরণ মিলিয়ে বিক্রি করা হয় চিতই পিঠা।
কথা হয় চাটমোহর বাস স্ট্যান্ড এলাকায় পিঠা বিক্রেতা জাহিদুল ইসলামের সাথে, তিনি বলেন, সকাল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত পাশাপাশি তিনটি চুলায় পিঠা বানিয়েও সরবরাহে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কারণ পিঠা আগে তৈরি করে রাখার উপায় নেই। ক্রেতাদের সামনেই তৈরি করে গরম গরম পরিবেশন করতে হয়। ক্রেতারা দোকানে বসে পিঠা খাওয়ার পাশাপাশি বাড়ির লোকদের জন্য নিয়ে যান।
আরো বলেন, শীতকালে পিঠা বিক্রি করে থাকি। বছরের বাকী সময় অন্য কাজ করি। পিঠা বিক্রির আয়ে সংসার চলে। ধান থেকে চাল এবং সেই চালের গুঁড়া পিঠা তৈরির মূল উপাদান। এক কেজি চালের গুঁড়া দিয়ে ২০টি চিতই বা ভাপা পিঠা তৈরি করা যায়। শীতে ভাপা আর চিতই পিঠার কদর বেশি। শীত বাড়লে পিঠা বিক্রিও বেড়ে যায়। প্রতিটি পিঠা বিক্রি হয় ১০ টাকা করে।
পৌরসভার বাস স্ট্যান্ড এলাকার রাজিব হোসেন বলেন, ১০ টাকায় শুঁটকি, কালোজিরা, সর্ষে ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা আর নারকেল ও খেজুর গুড় দিয়ে সুস্বাদু ভাপা পিঠা পাওয়া যায়। ভালো লাগে, তাই নিয়মিত খাই।
পার্শ্বডাঙ্গা এলাকার এরশাদ আলী বলেন, এ পথে যাওয়ার সময় ভাপা ও চিতই পিঠার পসরা সাজানো দেখে ভালো লেগেছে। এসব পিঠা খেয়ে অনেক মজা পেয়েছি।
পৌর সদরের দুজন ক্রেতা বলেন, আমরা প্রায়ই এখানে পিঠা খাই। চাল ভেঙে আটা করে পিঠা বানানোর সময় সুযোগ হয় না। ঝামেলা ছাড়া স্বল্প দামে হাতের নাগালে এখন পিঠা পাই। তাই এসব পিঠাই আমাদের ভরসা।