সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী মহাসম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার ভোর থেকেই জমায়েত হন আলেম-ওলামারা
সাদ ও তার অনুসারীদের বাংলাদেশে আসার অনুমতি দেওয়া হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পতনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তবলিগ জামাতের এক পক্ষের নেতারা। এ সময় তারা বলেন, সাদপন্থিদের টঙ্গীতে আলাদা ইজতেমার আয়োজন করতে দেওয়া হবে না। মহাসম্মেলন থেকে ৯ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘দাওয়াত ও তবলিগ, মাদ্রাসায়ে কওমিয়া এবং দ্বীনের হেফাজতের লক্ষ্য’ শীর্ষক সম্মেলনে তারা এই হুঁশিয়ারি দেন।
সমাবেশে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে স্বঘোষিত আমির সাদ ও তার অনুসারীরা বিশৃঙ্খলা করার পরিকল্পনা নিয়েছে। আমরা কোনোভাবেই সেটি হতে দেব না। তাদের সব ষড়যন্ত্র যে কোনো মূল্যে আমরা ব্যর্থ করে দেব। তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালিন সরকারকে বলব, আপনারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। আমরা আপনাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। আপনাদের মনে রাখতে হবে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অনেক ওলামায়ে কেরাম শাহাদাতবরণ করেছেন। আমরা শাপলা চত্বরে জীবন দিয়েছি। আওয়ামী জালিম সরকারের অনেক অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
সম্মেলনে মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর মধুপুর) জানান, বিশ্ব ইজতেমা নিয়ে সরকার দুই পক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে। আমি বলব কীসের পরামর্শ, এই সম্মেলন থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে, সরকারকে এটাই বাস্তবায়ন করতে হবে। ভিন্ন কোনো চিন্তা করলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। তিনি জানান, আমরা সরকারকে সহযোগিতা করব। সরকারকেও আলেমদের সহযোগিতা করতে হবে। নয়তো পূর্ববর্তী সরকারের মতোই তাদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হবে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, তওবা না করলে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভিকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, সরকারের প্রতি আমার দাবি হলো, যতদিন মাওলানা সাদ তার গোমরাহী বক্তব্য থেকে তাওবা না করবেন, ততদিন তাকে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া যাবে না। টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা আলেমদের তত্ত্বাবধানে শূরায়ে নেজাম দ্বারা পরিচালিত হবে। কাকরাইল মারকাজের কার্যক্রম ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে চালু রাখতে হবে।
হেফাজতের আমির জানান, দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের বর্তমান মুরব্বি মাওলানা সাদ বিভিন্ন সময় কুরআন, হাদিস, ইসলাম, নবী-রাসুল, নবুয়ত, সাহাবায়ে কেরাম এবং শরয়ী মাসআলা-মাসায়েল নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। তার বক্তব্যগুলো কুরআন-সুন্নাহবিরোধী, যা মেনে নেওয়া যায় না বলে উলেল্লখ করেন তিনি। মাওলানা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী জানান, দাওয়াতে তবলিগ প্রতিষ্ঠা হয়েছে দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে। যারা মাওলানা সাআদের বিরোধিতাকারী আলেমদের দেওবন্দি, হেফাজতি বলছে তারা গোমরাহীতে (বিভ্রান্তিতে) আছে।
হজরতজি ইলিয়াছ (রহ.) বলে গেছেন, যদি তবলিগ থেকে ইলম ও জিকির উঠে যায়, তা হলে দাওয়াতে তবলিগের কাজে গোমরাহী ঢুকে যাবে। অতএব ব্যক্তি মাওলানা সাআদের কারণে ছাত্র-জনতা ও আলেম-ওলামাদের আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীন নতুন এই বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি হোক এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বেকায়দায় পড়ুক আমরা চাই না। আমি আশা করি সার্বিক বিবেচনায় সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।
শায়খুল হাদীস আজিজুল হকের ছেলে মাওলানা মাহবুবুল হক বলেন, ‘সাবধান! তবলিগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। বাঘের লেজ দিয়ে কান চুলকালে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।
ঘোষিত ৯ দফা দাবি ॥ ১) এ দেশে কওমি মাদ্রাসাগুলো দারুল উলুম দেওবন্দের অনুকরণে শতাব্দীকাল ধরে দীনি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশাসন এবং সরকার দলীয় লোকজন নানাভাবে হয়রানি ও হস্তক্ষেপ করেছিল। আমরা লক্ষ্য করছি যে, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পরও কওমি মাদ্রাসাগুলোর ওপর ওই সরকারের ঘাপটি মেরে থাকা একটি বিশেষ মহল সুকৌশলে হস্তক্ষেপের পাঁয়তারা করে চলছে। আজকের মহাসম্মেলন থেকে আমরা এ জাতীয় সকল হয়রানি ও হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার জোর দাবি জানাচ্ছি।
২) আজকের এই মহাসম্মেলন জোর দাবি জানাচ্ছে যে, সাধারণ শিক্ষা সিলেবাসের সর্বস্তরে ধর্মশিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।
৩) বিগত সরকারের আমলে মজলুম আলেম-ওলামা ও তৌহিদি জনতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
৪) ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে রাতের আঁধারে সারাদেশ থেকে আগত নবীপ্রেমিক নিরীহ ছাত্র-জনতা ও মুসলিমদের ওপর বর্বরোচিত ও নৃশংস গণহত্যার দোষীদেরকে অবিলম্বে শাস্তির আওতায় এনে বিচার কার্যকর করতে হবে এবং সারাদেশের আলেম, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতার ওপর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
৫) ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ময়দানের জোড়ের প্রস্তুতিমূলক কাজে অংশগ্রহণকারী মাদ্রাসার নিরীহ ছাত্র- শিক্ষক এবং সাধারণ তবলিগী সাথী ভাইদের ওপর সাদপন্থিরা পুলিশ প্রশাসনের গুটিকয়েক অফিসারের সহযোগিতায় নৃশংস হামলা চালায়। আজকের এ মহাসম্মেলন থেকেওই হামলাকারী ও তাদের সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানানো হচ্ছে।
৬) স্বঘোষিত আমির মাওলানা সাদ কুরআন-সুন্নাহর অপব্যাখ্যা, নবী-রাসুল ও সাহাবায়ে কেরামের সমালোচনা এবং আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আকিদা-বিশ্বাস বিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। আরও উল্লেখ্য, দাওয়াত ও তবলিগের এই মকবুল মেহনত যুগ যুগ ধরে হজরত মাওলানা ইলিয়াস রহ., হজরত মাওলানা ইউসুফ রহ, ও হজরত মাওলানা এনামুল হাসান রহ.-এর উসুলের ওপর পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু মাওলানা সাদ তবলিগ জামাতের স্বীকৃত উসুল তথা নীতিমালা উপেক্ষা করে নিজস্ব মতের ভিত্তিতে পরিচালনা করার অপপ্রয়াস চালায়।
এ কারণে দারুল উলুম দেওবন্দসহ উপমহাদেশের প্রখ্যাত উলামায়ে কেরাম তার গুমরাহপূর্ণ বক্তব্য ও অবস্থানের ব্যাপারে উম্মাহকে সতর্ক করেছেন। তাই ইতোপূর্বে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান সাদ সাহেবকে বাংলাদেশে আসতে বাধা প্রদান করেছে। বিধায় বর্তমান সরকারের নিকট অদ্যকার মহাসম্মেলন থেকে জোর দাবি জানানো হচ্ছে যে, কোনো অবস্থাতেই মাওলানা সাদকে বাংলাদেশে আসতে দেওয়া যাবে না।
৭) ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে শূরায়ী নেজামে পরিচালিত বিশ্ব ইজতেমা এক পর্বে আয়োজন করা অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। তাই আগামী বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বেই অর্থাৎ ৩১ জানুয়ারি ও ০১-০২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার এবং দ্বিতীয় পর্ব ০৭-০৮-০৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার, শনিবার ও রবিবার করার তারিখ আজকের এ মহাসম্মেলন থেকে ঘোষণা করা হলো। এ ব্যাপারে সরকারের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি।
৮) কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার ময়দানের যাবতীয় কার্যক্রম উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে শূরায়ী নেজামে পরিচালিত হবে। ওই স্থানদ্বয়ে সাদপন্থিদের কোনো কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না।
৯) বর্তমান সরকারকে ইসলাম ও মুসলমানদের দুশমন অভিশপ্ত কাদিয়ানীদের অবিলম্বে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। এবং সেই সঙ্গে কাদিয়ানীদের ইসলামী পরিভাষা ব্যবহার নিষিদ্ধ করারও জোর দাবি জানাচ্ছে আজকের এ মহাসম্মেলন।
উদ্যানের সমাবেশ থেকে মাজার ভাঙচুর ॥ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার জানান, হয়রত হাজী খাজা শাহবাজ (রহ.) এর মাজার ভাঙচুর করেছে একদল তৌহিদি জনতা। মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এ মাজারে তা-ব চালায় তারা। এ সময় মারধর করা হয় মাজারে দায়িত্বরত ব্যক্তিদেরও। পরে সেনাবাহিনী আসার খবর পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।
প্রতক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকাল নয়টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যোগে ইসলামী মহাসম্মেলন আলোচনা শুরু হয়। এরই মধ্যে সকাল ১১টার দিকে একদল তৌহিদি জনতা হয়রত হাজী খাজা শাহবাজের (রহ.) মাজারে যান। সেখানে গিয়ে তারা তান্ডব চালান। এ সময় মাজারে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা বাধা দিতে এলে তাদেরও মারধর করা হয়। সরেজমিন দেখা যায়, মাজারের ভেতরের পর্দা ছিড়ে ফেলা হয়েছে। লোহার রেলিং ভাঙা হয়েছে। তা ছাড়া এ ঘটনার পর উধাও মজারের দান বাক্স।
এ ব্যাপারে মাজারের খাদেম জহিরুল ইসলাম বলেন, সকাল ১১টার দিকে তারা এসেই আমাদের গেটের বাইরের ব্যানার পোস্টার ছিড়ে ফেলে। আমাদের মাজারের ভেতরের যে সকল ভক্ত ছিল তাদের মারধর করে। তারা জুতা পড়ে মাজারে প্রবেশ করে এবং লোহার রেলিং ভেঙে ফেলে। তিনটির দান বাক্স ছিল সেগুলো তারা নিয়ে গেছে। এ সময় তারা এখানে একজন মহিলাকেও মারধর করেছে। ঘটনার এক পর্যায়ে আমরা সেনাবাহিনীকে খবর দেই। সেনাবাহিনী আসার কারণে তারা আমাদেরই মাজার পুরোপুরি ভাঙতে পারে নাই। এ সময় সমাবেশ শেষে তারা আমাদেরই মাজার ভাঙবে বলে হুমকি দিয়ে যায়। এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) খালেদ মুনসুর বলেন, এ ধরনের ভাঙচুরের কোনো খবর পাইনি। কেউ অভিযোগ দেয়নি।
এর আগে সকাল ৯টায় ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তবলিগ জমায়াতের একটি অংশের মহাসম্মেলন শুরু হয়।
মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, সম্মেলনে যোগ দিতে ফজরের নামাজের পর থেকে সারাদেশ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জমায়েত হয়েছেন আলেম-ওলামারা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ প্যান্ডেল মুসল্লিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। প্রখর রৌদ্রের খোলা মাঠ ছেড়ে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিয়ে বক্তব্য শুনতে দেখা গেছে।
এর আগে এই মহাসম্মেলনের আহ্বান জানান বিশিষ্ট আলেমদের মধ্যে ছিলেন আল্লামা শাহ্ মহিবুল্লাহ বাবুনগরী, আল্লামা খলিল আহমাদ কাসেমী, আল্লামা আবদুল হামিদ, আল্লামা আবদুর রহমান হাফেজ্জী, আল্লামা নুরুল ইসলাম, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা রশিদুর রহমান, আল্লামা শাইখ জিয়াউদ্দিন, আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান, আল্লামা আব্দুল কুদ্দুস, আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলিপুরী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মাওলানা আরশাদ রহমানি, মাওলানা সালাহউদ্দীন নানুপুরী, মাওলানা মুস্তাক আহমদ, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, মাওলানা আনোয়ারুল করীম, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী, মাওলানা মুফতি মনসুরুল হক, মাওলানা মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন, মাওলানা জাফর আহমাদ, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া, মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মাওলানা মুহিউদ্দিন রাব্বানী, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সা’দী, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা জিয়া উদ্দিন, মাওলানা আব্দুল হক, মাওলানা ইউনুস, মাওলানা নুরুল হক, মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব, মাওলানা আব্দুল হালিম, মাওলানা আনাস, মাওলানা হেলাল উদ্দিন, মাওলানা শওকত হোসাইন সরকার, মাওলানা নেয়ামত উল্লাহ আল ফরিদী ও মাওলানা ইসমাইল নূরপুরী প্রমুখ।
তবলিগ জমায়াতের দুটি অংশের একটি দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্ধলভি ও আরেকটি অংশ মাওলানা জুবায়ের হাসানের অনুসারীর।
জুবায়েরপন্থিদের এই সমাবেশ রাজনৈতিক শোডাউন, মন্তব্য সাদপন্থিদের ॥ বিভক্ত তাবলিগ জামায়াতের মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়েরপন্থিদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এই সমাবেশ নিছক একটি রাজনৈতিক শোডাউন বলে মন্তব্য করেছেন দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। মঙ্গলবার তাবলিগের জুবায়েরপন্থিদের মহাসম্মেলনে ‘মাওলানা সাদকে’ বাংলাদেশে আসতে দেওয়া হবে না, এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় এমন মন্তব্য করেন মাওলানা সাদ কান্ধলভীপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক মো. আবু সায়েম। তিনি জানান, আগামীকাল বুধবার সকাল ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে (৩য় তলায়) এক সংবাদ সম্মেলনে তা জানানো হবে।
মোঃ সায়েম জানান, এটা নিছক একটি রাজনৈতিক শোডাউন। সামনের নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে এবং মাদ্রাসার ছাত্রদের জড়ো করে তারা সরকারকে চাপে ফেলতে চাইছে। রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চাইছে। তবলিগের এই মোবারক মেহনতের সঙ্গে ছাত্ররা এখনও সম্পৃক্ত নয়।
সায়েম বলেন, আমরা মূল ধারার মেহনত করি। আমরা কাউকে হুমকি দিতে চাই না। তারা যে আমাদের ইজতেমা করতে দেবে না বা কাকরাইল মসজিদে প্রবেশ করতে দেবে না এগুলো ফাঁকা বুলি। কারণ সরকারই এর সমাধান করে দিয়েছে। দুই পক্ষকে সরকার সময় ভাগ করে দিয়েছে। এসব মীমাংসিত বিষয়ে উস্কানি দেওয়া কীসের লক্ষণ সেটা সাধারণ মানুষ বুঝবে। তিনি বলেন, আমাদের রোখ (সময়) আগামী ১৫ নবেম্বর থেকে শুরু। তখন আমরা কাকরাইলে যাব, ইনশা আল্লাহ।