খাগড়াছড়ির একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট
পর্যটকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে খাগড়াছড়ির পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের। খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার থেকে পর্যটকরা খাগড়াছড়ির সকল পর্যটন স্থান ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোয় ভ্রমণ করতে পারছেন এবং পর্যটকরা সাজেকেও যেতে পারবেন। জেলা প্রশাসকের এ ঘোষণায় সাধুবাদ জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায় জড়িত সংশ্লিষ্টরা। এতে দীর্ঘ এক মাস পর খাগড়াছড়ির পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসছে। এদিকে পর্যটন ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরা খাগড়াছড়িতে আগত পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন ছাড়সহ সকল সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার কথা জানিয়েছেন।
সম্প্রতি কিছু সহিংস ঘটনা তিন পার্বত্য জেলায়ও ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি-বাঙালি এবং আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংঘাতের কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন পার্বত্য জেলায় আজ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক হওয়ায় গত ১ নভেম্বর রাঙ্গামাটি থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলে খাগড়াছড়িতে ৫ নভেম্বর থেকে পর্যটকরা খাগড়াছড়ির সকল পর্যটন স্থানগুলো ভ্রমণ করতে পারবেন জানিয়ে দেয় স্থানীয় প্রশাসন। এদিকে খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় পর্যটকরা সাজেকেও এখন থেকে ভ্রমণ করতে পারবেন। অপরদিকে খাগড়াছড়িতে বিধি নিষেধ তুলে দেওয়ায় পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত কথা জানিয়েছেন স্থানীয় পর্যটন ব্যবসায়ী, যানবাহন চালক ও স্থানীয়রা ।
খাগড়াছড়ির হোটেল ব্যবসায়ী মো. সাগর জানান, দীর্ঘদিন পর্যটন ব্যবসা বন্ধ থাকায় পুরো খাগড়াছড়িতে ৫০ কোটি টাকার ওপরে লোকসান হয়েছে এবং খাগড়াছড়ির ইমেজের ক্ষতি বেশি হয়েছে। খাগড়াছড়ি পর্যটন কর্পোরেশনের ম্যানেজার উত্তম কুমার মজুমদার জানান পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুতি নিয়েছে খাগড়াছড়ির পর্যটন উদ্যোক্তারা। সরকারি-বেসরকারি পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে খাগড়াছড়ি ও সাজেক ভ্রমণ করতে আসা পর্যটকদের আতিথেয়তা দিতে সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান পর্যটকদের আগমনের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জেলার সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশ খাগড়াছড়ি উপপরিদর্শক নিশাত রায় জানান, আগের মতোই পর্যটকদের নিরাপত্তায় কাজ করছে টুরিস্ট পুলিশ। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টহল থাকবে। দুর্গম এলাকার পর্যটন কেন্দ্রে গিয়ে কেউ সমস্যায় পড়লে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছে এই কর্মকর্তা।
স্থানীয়দের প্রত্যাশা পাহাড় আর প্রাকৃতিক ঝর্ণার অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভ্রমণ পিপাসুরা নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতে পারবেন পর্যটন শহর খাগড়াছড়িতে ।
৪৫ দিন পর খুলল সাজেক ভ্যালি ॥ দীর্ঘ ৪৫ দিন টানা বন্ধ রাখার পর মঙ্গলবার পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে দেশের বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণীয় স্পট সাজেক ভ্যালি। পর্যটকদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় স্বস্তি ফিরেছে সাজেকের পর্যটন ব্যবসায়ীদের মাঝে। ১ নভেম্বর রাঙ্গামাটির পর্যটন স্পট খুলে দেওয়া হলেও খাগড়াছড়ির স্পটগুলো খুলেছে মঙ্গলবার। খাগড়াছড়ি হয়ে সাজেক যেতে হয় বলে রাঙ্গামাটির সাজেকও ওইদিন খুলে দেয়া হয়েছে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসকের এ ঘোষণায় সাধুবাদ জানিয়েছেন পর্যটন ব্যবসায় জড়িত সংশ্লিষ্টরা। এতে দীর্ঘ দেড়মাস মাস পর পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। স্থানীয়দের প্রত্যাশা পাহাড় আর প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভ্রমণ পিপাসুরা নিশ্চিন্তে আগের মতো সাজেকে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।
২০ সেপ্টেম্বর শেষবারের মতো পর্যটকরা সাজেক প্রবেশের পর পাহাড়ের সংঘাত এবং নিরাপত্তার জন্য পর্যটক ভ্রমণে প্রশাসনের নিরুৎসাহিত করার ফলে আর পর্যটকরা সাজেকমুখী হতে পারেননি। মঙ্গলবার সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় সাজেকে প্রাণ চাঞ্চল্যতা দেখা দিয়েছে বলে সাজেক কটেজ সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ জানান। এদিকে গত দেড় মাস ধরে সাজেকে পর্যটক ভ্রমণ করতে না পারায় ৮-৯ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পর্যটক সংশ্লিষ্টরা জানান, সাজেকে ১১৬টি হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে। এছাড়ার ১৪টির বেশি রেস্তোরাঁ থাকলেও এতে গত দেড় মাস ছিল না কোনো বিক্রি। খুলে দেওয়ার দিন পর্যটকদের ঢল নেমেছে। ওইদিন ৫ শতাধিক পর্যটক সাজেকে ভ্রমণে গিয়েছেন বলে সমিতির সভাপতি জানান।