আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ
মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথের বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচরের কারণে ফেরিসহ ভারি নৌযান চলাচলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার রাত ৯টার পর থেকে শনিবার সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই পথে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগ বেশ কিছুদিন ধরে এ রুটের বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজিং কার্যক্রম চালালেও তাতে কোনো ফল আসেনি। তাদের দাবি, দ্রুত পানি হ্রাস ও মূল চ্যানেলের বিভিন্ন অংশে ডুবোচরে ফেরি আটকে যাওয়ায় নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঘাট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর ১৭ জুন থেকে এ নৌপথের নাব্যতা ঠিক রাখতে ড্রেজিং কার্যক্রম শুরু করা হয়। আরিচা ঘাটের কাছে মূল চ্যানেলসহ কানাইদিয়া ও মোল্লারচর এলাকায় বিআইডব্লিটিএ’র নিজস্ব ৯টি ড্রেজার পলি অপসারণে চলমান রয়েছে। গত কয়েকদিনে অব্যাহত পানি হ্রাসের ফলে এমন অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে ড্রেজিং ইউনিট নিরলস কাজ করে আসছে। শীঘ্রই অবস্থার উন্নতি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন।
ফেরি সেক্টর বিআইডব্লিউটিএ আরিচা আঞ্চলিক ম্যানেজার আবু আব্দুল্লাহ বলেন, এ পথে বর্তমানে সংস্থার চারটি রো রো ফেরি মোতায়েন রয়েছে। যানবাহন বোঝাই করা একেকটি ফেরি চলাচলে ১০ ফুট নাব্যতা প্রয়োজন। গত কয়েকদিন নদীতে পানি কমায় মূল চ্যানেলের বিভিন্ন অংশে ডুবোচরের সৃষ্টি হয়েছে। এতে কোনোভাবেই ফেরি চলাচল করা সম্ভব হচ্ছে না। ড্রেজিং বিভাগের খামখেয়ালীপনায় শুক্রবার রাত থেকে এমন নাজুক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ পথে ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং ইউনিটের আরিচা অঞ্চলের প্রকৌশলী ওসমান গনী জানান, চলতি বছরে আরিচা-কাজিরহাটসহ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ৩৮ লাখ ঘনমিটার পলি অপসারণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪০ ফুট প্রস্থ বেসিং ও ১০ ফুট গভীরতার চ্যানেল তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করতে জোর চেষ্টা চলছে।
এদিকে, আরিচা-কাজিরহাট রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় উভয় ঘাট এলাকায় পারের অপেক্ষায় আটকে পড়ছে অসংখ্য যানবাহন। যমুনা ব্রিজ এড়িয়ে এ পথে আসা এ সকল যানবাহন মালিক-শ্রমিকরা পড়েছেন বিপাকে। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা শেষে অনেকেই বিকল্প পথে গন্তব্যে রওনা হলেও শনিবার সন্ধার পরে আরিচা ঘাটে ফেরি পারের অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে দুশতাধিক পণ্যবাহী ট্রাকের বিশাল লাইন।
পারের অপেক্ষায় থাকা ট্রাক চালক সিদ্দিক মিয়া জানান, চট্টগ্রাম থেকে সামুদ্রিক মাছ বোঝাই ট্রাকটি নিয়ে শনিবার ভোরে আরিচা ঘাটে পৌঁছেছি। এসেই শুনছি ফেরি বন্ধ। বিকল্প ও সহজ যাতায়াতের জন্য এ রুটে এসে ফেসে গেছি। সারাদিন অপেক্ষা শেষে আমাদের বহরের আরও কয়েকটি ট্রাক সিরাজগঞ্জের যমুনা হয়ে গন্তব্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি।
চালক রমজান আলী জানান, পারের অপেক্ষায় ঘাটে বসে আহার নিদ্রায় অতিরিক্ত অর্থ অপচয় হচ্ছে। সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছতে না পারলে কোম্পানি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। এখনো অপেক্ষায় আছি কখন ফেরি ছাড়ে।