ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৮ কার্তিক ১৪৩১

ববি’র নিহত ছাত্রী মাইশার নামে হচ্ছে ফুটওভার ব্রিজ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল

প্রকাশিত: ০০:২৯, ৩ নভেম্বর ২০২৪

ববি’র নিহত ছাত্রী মাইশার নামে হচ্ছে ফুটওভার ব্রিজ

নিহত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা ফওজিয়া মিম

    *ক্ষতিপূরণ পাবে পরিবার

ক্ষতিপূরণ পাবে নিহত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা ফওজিয়া মিমের পরিবার। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ পারাপারে বিভিন্ন উদ্যোগও বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে ফুটওভার ব্রিজটি মাইশার নামে করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

শনিবার দিবাগত রাতে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক ফয়সাল মাহমুদ রুমি বলেন, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্তরিকতা, মানবিকতা ও তাদের ঐক্লান্তিক প্রচেষ্টায় বাস চাঁপায় মাইশা ফওজিয়া মিম নিহতের ঘটনায় শুক্রবার (১ নভেম্বর) রাতে বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি সুন্দর সমাধান হয়েছে।

সভা সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া সভাটি শনিবার ভোররাত পর্যন্ত চলে। যেখানে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি ব্যতিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, সিন্ডিকেট মেম্বার, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, জেলা প্রশাসক, সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, র‌্যাব-৮’র উপ অধিনায়ক, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, ডিজিএফআইর আঞ্চলিক প্রধান, বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির ও নারায়ণগঞ্জ বাস মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় দীর্ঘ আলোচনার মধ্যদিয়ে ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিহত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা ফওজিয়া মিমের পরিবারকে বাস মালিক ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। 

এছাড়া আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ ৫ লাখ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও ৫ লাখ টাকাসহ মোট ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ব্রিজটির নাম নিহত মাইশা ফওজিয়া মিমের নামে করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়কে গতিসীমা নির্ধারণ করে সাইনবোর্ড স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান জানাতে অদূরে আরও কিছু সাইনবোর্ড স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সামনের মহাসড়কে স্পিড ব্রেকার, রাম্বল স্ট্রিপ বসানো, মহাসড়কের পাশে ফুটপাত নির্মাণ, দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা নিশ্চিত করে রাতের সড়কে পল্লী বিদ্যুতের সহায়তায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা, সার্বক্ষণিক ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করণ এবং বিশ্ববিদ্যালয় সামনে স্থায়ী ট্রাফিক বক্স নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এরমধ্যে কিছু কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক ফয়সাল মাহমুদ রুমি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৈঠকে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন। 

তারা বাস মালিকের আর্থিক অবস্থা ও নিহত সহপাঠীর পরিবারের দিক বিবেচনা করেই সব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এর আগে শুক্রবার রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ছাত্রী নিহতের ঘটনায় ঘাতক বাস চালককে আটক করেছে পুলিশ। 

শনিবার দুপুরে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে বাস চালককে পটুয়াখালীর মরিচবুনিয়া এলাকা থেকে আটক করা হয়। চালকের নাম মো. জামিল হোসন (২৫)। তিনি ওই এলাকার হায়দার হাওলাদারের ছেলে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাত নয়টায় ববি'র সামনে নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলস পরিবহনের বাস চাঁপায় শিক্ষার্থী মাইশা ফওজিয়া মিম নিহত হন। তিনি ববির ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

 

রাজু

×