ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১

সৈয়দপুর ষ্টেডিয়ামের আগাছা পরিষ্কার করে দুই মাঠ করা হচ্ছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, সৈয়দপুর, নীলফামারী

প্রকাশিত: ২০:৪৬, ১ নভেম্বর ২০২৪; আপডেট: ২০:৪৭, ১ নভেম্বর ২০২৪

সৈয়দপুর ষ্টেডিয়ামের আগাছা পরিষ্কার করে দুই মাঠ করা হচ্ছে

সৈয়দপুর  স্টেডিয়ামের আগাছা অপসারণের পর পৃথক দুটি মাঠ নির্মাণের কাজ শুরু করেছে স্থানীয় ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ। এতে ৪৩ বছরের বৈষম্য থেকে মুক্ত হতে চলেছে এ জসপদের ক্রীড়াঙ্গন।

জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের আগে এখানে ছিল অবাঙালিদের আবাসস্থল। এখানে অবাঙালিরা বাঙালিদের হত্যা করে মাটি চাপা দিত। তবে সেই গণকবর চিহ্নিত হয়নি। স্বাধীনতার পর এখানকার অবাঙালিরা পালিয়ে যায়। ১৯৭৬ সালে চিকিৎসক আব্দুল গফফার এখানে  স্টেডিয়াম  তৈরির জন্য পাঁচ শতক জমি দান করেন। ১৯৭৭ সালে রুপরেখা তৈরি হয়।

পরে নীলফামারী জেলা প্রশাসক আরও চার একর জমি বরাদ্দ দেন। এতে মোট প্রায় ৭ একর জমি সীমানা প্রাচীরে ঘিরে স্টেডিয়াম  তৈরি করা হয়। ১৯৭৮ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এ স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেন।

এ শহরে বিমানবন্দর, রেলকারখানা, ব্রিগেড সেনানিবাস, রেলওয়ে জেলা অফিসসহ নানাবিধ বিভাগীয় স্থাপনা থাকায় ঈর্ষান্বিত হন নীলফামারীর নেতৃবৃন্দ। তারা এই স্টেডিয়ামের নামে গ্যালারীর প্রস্তাব দেওয়া হলেও ফাইল আটকে নীলফামারীতে ২০১৪ সালে  চৌদ্দ  কোটি উনআশি হাজার টাকা ব্যয়ে আন্তর্জাতিক মানের ও কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় গ্যালারি স্টেডিয়াম নির্মাণ করে।

তবে ৫ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরিবর্তন হয় ক্রীড়া সংস্থার রূপরেখা। ও এতে ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক, স্থানীয় রাজনীতিবিদ, ক্রীড়াবিদ, ছাত্র সমন্বয়কের সঙ্গে পরামর্শে এই স্টেডিয়ামকে পরিকল্পিতভাবে আর্ন্তজাতিক ও জাতীয় পর্যায়ের খেলাধুলা আয়োজনের লক্ষ্যে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় স্টেডিয়ামের বিশাল জঙ্গলের বনভূমি ৬০ জন শ্রমিক দ্বারা অপসারণ করা হয়। উঁচু-নিচু মাঠটিকে সমান করতে ৩১ অক্টোবর থেকে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ দেওয়া হয়। 

মাঠ সংস্কার দেখে এ জনপদের বিভিন্ন বয়সি ক্রিকেটার, ফুটবলার ও অ্যাথলেটরা এখন স্বপ্ন দেখছে।  বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক উইকেট কিপার মুখতার সিদ্দিকী বলেন, এটা ছিল আমাদের স্বপ্ন। উত্তরাঞ্চলে এত বড় মাঠ কোথাও নেই। তাই মাঠটি সংস্কারের পর বিসিবি পরিচালকদের পরিদর্শনের কাছে আবেদন করব। 

নীলফামারী জেলা দলের কোচ জামিউল ইসলাম বাবলু বলেন, একটি মাঠ। ক্রিকেট ও ফুটবল নিয়ে দ্বন্দ্ব লেগে থাকে। তাই এ ষ্টেডিয়ামে দুটি মাঠ ও অবকাঠোমগত সুবিধা সৃষ্টি হলে ভালো হবে। সৈয়দপুর ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আহসান উদ্দিন বাদল বলেন, এই স্টেডিয়ামে দুটো মাঠ হবে। গ্যালারিসহ অন্যান্য ফ্যাসলিটিজ তৈরির যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। তাই চেষ্টা করব।

সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক এবং ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক নর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, এ শহরে থ্রি স্টার হোটেল, আকাশ, রেল ও সড়কপথের সমৃদ্ধ যোগাযোগ ব্যাবস্থা রয়েছে।

তাই সকলের সহযোগিতায় আমরা এ স্টেডিয়ামে দুটো মাঠ, জিমনেসিয়াম, ড্রেসিং রুম, গ্যালারিসহ যাবতীয় বিষয় গড়ার উদ্যোগ নিয়েছি। এরপর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে আবেদন জানাব। এটি বাস্তবায়ন হলে বদলে যাবে উত্তরের ক্রীড়াঙ্গনের দৃশ্যপট।

×