মেঘনা, ধলেশ্বরী, ইছামতি, পদ্মা ও রজতরেখা নদী দখলের হিড়িক। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ওয়েবসাইডে মুন্সীগঞ্জে ৫৭টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি নদী দখলের তালিকা রয়েছে। এমনকি নদী ভরাট করে মার্কেট-বাজার তৈরিসহ বাস্তবে এই সংখ্যা আরও বেশি। প্রশাসন বলছে, দখলদারদের উচ্ছেদ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদর উপজেলার মিরেশ্বর মৌজায় ক্রমেই ছোট হচ্ছে ধলেশ্বরী। আর বড় হচ্ছে সিমেন্ট কারখানা। নদী রক্ষা কমিশন নদী দখলকারীদের তালিকা প্রকাশের পরও থামছে না দখলকর্ম। নদী গ্রাসের পরিধি বাড়ছেই।
মেঘনা নদীর বড় একটি অংশ দখল হয়ে গেছে। গজারিয়া উপজেলার নয়ানগর মৌজার নদী শিপইয়ার্ডের পেটে। দখলদার চিহ্নিত হওয়ার পরও উচ্ছেদ অভিযান নেই। ক্রমেই নদীর দিকে আরও প্রসারিত হচ্ছে।
ইছামতি ও রজতরেখা নদীতেও দখলের প্রতিযোগিতা। জেলার নদী খাল বিল সবখানেই ভরাট আর দখলের রাজত্ব।
মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা মুন্সীগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান বলেন, সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এবং অন্য কোম্পানিগুলো প্রশাসনের কাছে সরকারের অসৎ লোকদের সঙ্গে যোগসাজশে অনবরত এই নদী দখল কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নদী দখলের ফলে সবচেয়ে বড় সর্বনাশ হচ্ছে নদী সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। পানি প্রবাহ বিনষ্ট হচ্ছে।
একইসঙ্গে এর দূষণের মাত্রাও বেড়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে নদীর সীমানা চিহ্নিত কাজ করতে হবে। নদীর দক্ষিণপ্রান্তে সীমানা প্রাচীর করলেও নদীর সিমেন্ট ফ্যাক্টরির প্রান্তে কোনো সীমানা দেওয়া হয়নি। নদীর উত্তরদিকে দুই মাইল নদী। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা সীমানা নির্ধারণের কাজটি বিলম্বিত করছে।
জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা তুল জান্নাত বলেন, ‘মুন্সীগঞ্জ নদীবাহিত জেলা। এখানে অনেক নদী রয়েছে। নদী দিয়ে জেলাটি ঘেরা। কাজেই এখানে নদী নিয়ে আমাদের কাজ করতেই হবে।
নদীর পাড়গুলো দখলমুক্ত করার জন্য অবৈধ যারা তাদের উচ্ছেদ করতে জেলার ৬টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের ইতোমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নদী দখল, দূষণ এবং নদীর প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য আমরা কাজ করছি।’
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের ওয়েবসাইটে থাকা এই তালিকার মধ্যে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় শাহ্ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, গজারিয়ায় থ্রি অ্যাঙ্গেল মেরিন লিমিটেড, সুপার বোর্ড মিলস লিমিটেড, সুপার ফরমিকা অ্যান্ড লেমেনিশন লিমিটেড, মাসুদা কেমিক্যাল কমপ্লেক্স লিমিটেড, আনোয়ার জুট শিপিং মিলস লিমিটেড, বেঙ্গল এনার্জি লিমিটেড এবং নারায়ণগঞ্জ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড শিপ বিল্ডিং লিমিটেড উল্লেখযোগ্য।