মাদারীপুরে আড়াই হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কের বেহালদশা। দীর্ঘদিন মেরামত না হওয়ায় ইটের রাস্তাগুলোও পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এসব সড়কে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। তবে শীঘ্রই ঝুঁকিপূর্ণ সড়কগুলো মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী।
জানা গেছে, সদর উপজেলার পশ্চিম মাদ্রা থেকে ঘুঙ্গিয়ারকুল ৬ কিলোমিটার এলাকার পুরোটাই মাটির রাস্তা। বড় বড় গর্ত আর রাস্তায় পানি জমে থাকায় ভোগান্তির শেষ নেই পথচারীদের। এমন অবস্থায় বন্ধ হয়ে গেছে ভ্যান ও ইজিবাইক চলাচল। কোথাও ইট সরে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত।
কোথাও আবার বৃষ্টির পানি জমে থাকায় বেড়েছে ভোগান্তি। গ্রামীণ অধিকাংশ সড়কেরই একই অবস্থা। ডাসার উপজেলার দেলোরবাজার-দর্শনা সড়ক। সড়কটির মাইজপাড়া থেকে বাদামতলা ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার অংশের খুবই করুণ অবস্থা। কাঁচা রাস্তার সঙ্গে যতটুকু ইটের সোলিং রয়েছে তাতেও সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। একটু বৃষ্টিতেই কাদা হওয়ায় দুর্ভোগ বাড়ে চলাচলকারীদের।
স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়েন বিড়ম্বনায়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, একাধিকবার পাকা সড়ক নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা হয়নি। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে ক্ষুব্ধ পথচারী, এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধি।
এলজিইডি অফিস সূত্র জানায়, মাদারীপুরের ৫টি উপজেলায় ২ হাজার ৩৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা ও ইটের সড়ক রয়েছে ৪৪৯ কিলোমিটার। আর ১ হাজার ৬শ’ ৮ কিলোমিটার পাকা ও ৮১ কিলোমিটার ঢালাই সড়ক রয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি।
পশ্চিম মাদ্রা গ্রামের কহিনুর বেগম বলেন, ‘আমাদের এলাকার রাস্তাটি খুব খারাপ অবস্থা। শুকনো মৌসুমে হাঁটাচলা করা গেলেও বৃষ্টির দিনে পুরো সড়কেই কাদা হয়ে যায়। এতে চলাচলের আর কোন অবস্থাই থাকে না। জরুরিভিত্তিতে এখানে পাকা সড়ক প্রয়োজন।’
ঝাউদি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আসাদ বলেন, ‘দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আমাদের এলাকার সড়কটির কোনো উন্নয়ন হয়নি। ডিজিটাল যুগে এমন কাঁচা রাস্তা থাকে এটা আমাদের বোধগম্য নয়। পাকা সড়ক না থাকায় এলাকায় হাজার হাজার মানুষকে প্রতিদিন দুর্ভোগ হচ্ছে। এর থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই।’
ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য অজেদ বেপারি বলেন, আমাদের এলাকার দেলোরবাজার-দর্শনা সড়কটির বেশিরভাগ স্থানে নাজেহাল অবস্থা। বিষয়টি বারবার বিভিন্ন অফিসে জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। দ্রুত এটি মেরামত করা প্রয়োজন।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর-এর (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী বাদল চন্দ্র কির্ত্তনীয়া জানান, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে নিয়ে গ্রামীণ সড়কগুলো পরিদর্শন করা হবে। জনদুর্ভোগ কমাতে তালিকা করে ঝুঁকিপূর্ণ সড়কগুলো মেরামত করা হবে।’