সেনাবাহিনীর অভিযানে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট ও হবিগঞ্জ সদরসহ বিভিন্ন স্থানে পাসপোর্ট তৈরি দালাল চক্র দলের ৩জন আটক হয়েছে। আটককৃতরা হলেন জেলার চুনারুঘাট উপজেলার আইতন গ্রামের আব্দুস সালাম (৪৯),হবিগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের সাইদুল ইসলাম (৫৫), বড় বহুলার ফরিদ মিয়া (৪৫)।
আটককৃতদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসহ বিপুল সংখ্যক পাসপোর্ট, এনআইডি, বিভিন্ন দেশের ভিসা ছাড়াও সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিকেলে আটককৃতদেরকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। এর আগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বর্তমানে চলমান অভিযানের অংশ হিসেবে ১৭ ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের অধীনস্থ ৩৬০ পদাতিক ব্রিগেডের ১৩ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট কর্তৃক এ অভিযানে ওই ৩ জনকে আটক করা হয়।
১৩ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি টহল দল মেজর ইসরাফ আহমেদের নেতৃত্বে অভিযানে মোঃ সাইদুল ইসলাম নামে একজন পাসপোর্ট তৈরির দালাল চক্রের সদস্যকে আটক করে। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে হবিগঞ্জ সদর ও চুনারুঘাটে অভিযান চালিয়ে দালাল চক্রের দলের আরও ২ সদস্য ফরিদ এবং সালামকে আটক করে।
আটক পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আটককৃতরা পাসপোর্ট তৈরি, এনআইডি সংশোধনে দালাল চক্র দলের সদস্য হিসেবে কাজ করে। আটককৃত সালামের কাছ থেকে ১৮টি পাসপোর্ট, স্মার্ট কার্ড ৮টি, নরমাল এনআইডি ২১টি, পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ ১০টি, এনআইডি কার্ডের ফটোকপি ৪০টি, মেডিকেল রিপোর্ট ১৩টি, ৪২ জনের ৪৯টি ছবিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম।
সাইদুলের কাছ থেকে ৮টি পাসপোর্ট বই, স্মার্ট কার্ড এনআইডি ১৪টি, নরমাল এনআইডি ১০টা, ভিসা ফটোকপি ৩০টি, অঙ্গিকারনামা ১৮টি, পাসপোর্ট ফটোকপি ১০টি, কোভিড ১৯ এর ফটোকপি ৬টি, বিভিন্ন দেশের ভিসার ফটোকপি ১৯টি, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ১৩টি, সৌদি আরবের ভিসা ফটোকপি ৭টি, বিমান টিকেট ২০টি, বিভিন্ন প্রকারের ফরম ৪৫টি, মানি রিসিভ ও ভিসা ফটোকপি ১০টি, জন্ম সনদ ২টি। ফরিদ মিয়ার কাছ থেকে এবি ব্যাংক চেক বই একটি, এবি ব্যাংক ভিসা কার্ড একটি, স্মার্ট এনআইডি কার্ড ২টি, চালান ফরম ১৭টি, ডেলিভারি স্লিপ ১০০টি, লেজার বই ১টি, সাপপোর্ট এনআইডি ফটোকপি ১২টি, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ৮টি, পাসপোর্ট তথ্য সংশোধন ফরম ১৭টি, এনআইডি তথ্য সংশোধন ফরম একসেট, কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ তাদের কাছে নগদ টাকা বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে জব্দ করা হয়েছে।
তারা দীর্ঘদিন ধরে জেলার বিভিন্ন স্থানের লোকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পাসপোর্ট তৈরী, এনআডির বয়স, প্রয়োজন অনুযায়ী বয়স কমানো বাড়ানো যাবতীয় সংশোধন বিনিময় করে আসছে। তাদের সাথে জড়িত রয়েছে সংশ্লিষ্ট থানার কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও পোটপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে তারা বিভিন্ন লোকজনকে নানা দেশে লোভনীয় অফারে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।