সিন্ডিকেট।
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ললিতাকে লালন পালন করছেন কৃষক। কথায় আছে লাভের ধন টিয়ায় খায়- তেমনি ললিতাকে বেঁচে কৃষক পাচ্ছেন ৩০/৩১ টাকা আর ভোক্তা পর্যায়ে এসে ললিতা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়! আজ শুক্রবারের হাটবাজারে ছিল এই দাম। শুধু শুক্রবার বলে কথা নয়- প্রতিদিনই এই দামে ভোক্তদের কিনতে হচ্ছে ললিতাকে। যেন চপ ও ভর্তায় ললিতার জুড়ি নেই।
গাঢ় লাল ও কালচে রঙের ললিতা বেগুন। জাত তার হাইব্রিড ঢেপা বেগুন। যে বেগুন শুধু রাজধানী বাসী নয় উত্তরাঞ্চলের প্রতিটি জেলার হাটবাজারেই ৮০ টাকা কেজিতে কেনা বেচা হচ্ছে। ললিতার জন্ম হচ্ছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায়। স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ চট্রগ্রাম, রংপুর দিনাজপুর,নীলফামারী, রাজশাহী যাচ্ছে।
উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের বিড়ালীজোত এলাকায় ললিতার চাষি খোরশেদ আলী। তার জমিতে প্রতিদিন টাটকা টাটকা ললিতা তুলে নিয়ে যাচ্ছে পাইকাররা। কৃষক খোরশেদ আলীর কাছে পাইকাররা ললিতাকে কিনছেন বারোশত টাকা মন দরে। অর্থাৎ চল্লিশ কেজি। দামে দাঁড়ালো ললিতার কেজি ৩০ টাকা। বেগুন চাষি খোরশেদ আলী বলেন, এটি হাইব্রিড জাতের। আবাদে ভালো ফলন হয়েছে। কয়েকবার তুলে বিক্রি করেছি। বর্তমানে পাইকরা এসে ১২০০-১৩০০ টাকা মণ কিনে নিচ্ছে।
৩২ শতক জমিতে আবাদে খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। তবে ইতিমধ্যে তিন লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করে ফেলেছি। প্রতি সপ্তাহেই ২০/২১ মণ বেগুন তুলতে পারছি। আশা করছি আগামী দুই আড়াই মাসও বেগুন তুলতে পারব। কিন্তু কৃষক খোরশেদের প্রশ্ন আমি বিক্রি করি ৩০ টাকা কেজিতে। পাইকাররা কিনে নিয়ে যাচ্ছে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দিচ্ছে। যদি ধরা যায় এক কেজি বেগুর পরিবহনে ১০ টাকা খরচ তাহলে খুচরা বিক্রি পর্যন্ত ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হতে পারে বাজারে। কিন্তু জানতে পারছি ললিতার দাম নাকী ৮০ টাকা কেজি। এই দাম শুনে কৃষক খোরশেদ আলীর মাথায় হাত।
পাইকারি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, চাষিদের কাছ থেকে মাঠ থেকেই বেগুন কিনছি আমরা। এরপর বিভিন্ন আড়ৎদারদের কাছে বিক্রি করছি কেজিতে মাত্র ৫টাকা লাভে। বেগুনটি প্রথম প্রথম বাজারে ওঠার সময় ২৫০০ টাকা পর্যন্ত পাইকারি বিক্রি হয়েছে। কেজি পড়েছিল ৬২ টাকা ৫০ পয়সা। এখন সাড়ে ১২০০ টাকা দিচ্ছি। কেজি কিনছি ৩০ টাকা ৫০ পঞ্চাশ পয়সা।অথচ খুচরা ব্যবসায়ীরা এই বেগুন কেজি বিক্রি করছেন ৮০ টাকা। তাহলে বেগুনেও কত বড় সিন্ডিকেট প্রশ্ন তুলেন এলাকার সাধারন মানুষজন।
রিয়াদ