কাল নাগিনী সাপ। যার বৈজ্ঞানিক নাম হচ্ছে ক্রাইসোপেলিয়া অর্নাটা। এমনই একটি বিষধর সাপের বাচ্চা শুক্রবার সকালে ধরা পরেছে জেলার গৌরনদী পৌরসভার গেরাকুল গ্রামে। এই সর্বপ্রথম ওই গ্রামে কাল নাগিনী সাপের বাচ্চা উদ্ধারের পর গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে।
ওই গ্রামের যুবক সরাফত হোসেন বাবু জানান, সকাল দশটার দিকে দুর্লভ প্রজাতের একটি সাপের বাচ্চা দেখতে পেয়ে তারা কৌশলে ওই সাপের বাচ্চাটি বোতলজাত করে স্থানীয় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে হন্তান্তর করেছেন। বন বিভাগের কর্মকর্তারা সাপের বাচ্চাটি দেখে অবাক হয়েছেন। পরবর্তীতে অনলাইনের মাধ্যমে বন কর্মকর্তারা নিশ্চিত হয়েছেন উদ্ধার হওয়া বাচ্চাটি কাল নাগিনী সাপ।
বন কর্মকর্তারা গ্রামবাসীকে সর্তকতার সাথে চলাচলের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। বিষধর এ সাপের বাচ্চাটি সংশ্লিষ্ট রেসকিউটিমের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন।
বিষধর কাল নাগিনী সাপটি একটি মাঝারি আকারের সাপ। যার সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য হয় ৪ দশমিক ২৭ ফুট পর্যন্ত। লেজ মোট দৈর্ঘ্যের প্রায় এক চতুর্থাংশ। এই সাপটির রং অতিসুন্দর, এদের শরীর সবুজাভ হয়। কালো এবং হলুদ ব্যান্ডের সাথে উপরে লাল-কমলা দাগ থাকে সারা শরীরে। এদের নিচের দিকটি সবুজ-হলুদ রঙের হয়। শরীরের আঁশগুলি তীব্রভাবে উপরের দিকে ভাঁজ করা থাকে।
এর মাথা চ্যাপ্টা ঘাড়ের চেয়ে চওড়া এবং একটি ভোঁতা নাকসহ বড় চোখ রয়েছে। এর মাথায় হলুদ রঙসহ অনেকগুলি কালো প্যাটার্ন্স দেখা যায় এবং লাল রঙের চেরা একটি জিহ্বা থাকে।
এই সাপগুলি দুর্দান্ত পর্বতারোহী, এমনকি সোজা গাছজুড়ে চলাফেরা করতে সক্ষম। এই সাপটি তার পেট বরাবর রিজ স্কেল ব্যবহার করে গাছে আরোহণ করে, তার দেহকে গাছ থেকে উপরে এবং দূরে ঠেলে দিয়ে, পেট এবং পাঁজরগুলিকে ছড়িয়ে দিয়ে তার শরীরকে একটি ছদ্ম অবতল ডানাতে পরিণত করে নিজেকে চালিত করে।
এই সাপ দিনে সক্রিয় থাকে এবং বেশিরভাগ সময় গাছে কাটায়। মে এবং জুন মাসে মহিলা সাপেরা ডিম পারে। কাল নাগিনী সাপ, মাটি, পাতার আবর্জনা বা পচা কাঠের মধ্যে ছয় থেকে ১৪টি ডিম জমা করে।