কর্ণফুলী টানেল
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বহুল আলোচিত টানেলের এক বছর পার হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী যানবাহন চলছে না। ফলে প্রত্যাশার চেয়ে টোল আদায় অনেক কম। তাই লোকসানের মুখে প্রকল্পটি। এমন পরিস্থিতিতে আনোয়ারা প্রান্তে আরও উন্নয়ন এবং প্রস্তাবিত সার্ভিস এরিয়া বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, টানেলের দুই প্রান্তের সংযোগ সড়কেও পরিবর্তন আনার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত টানেল দিয়ে এখন পর্যন্ত প্রত্যাশা অনুযায়ী যানবাহন চলছে না। ফলে আয়ের চেয়ে টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় এখন পর্যন্ত বেশি। সেতু কর্তৃপক্ষের হিসেবে, টানেল থেকে টোল বাবদ দৈনিক গড়ে আয় ১১ লাখ টাকা। অন্যদিকে টানেলের রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ দিনে খরচ হয় সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা।
টানেল দিয়ে দিনে ১৮ হাজার গাড়ি চলাচলের প্রত্যাশা করা হলেও এখন পর্যন্ত দিনে গড়ে চলছে ৪ হাজারের মতো। অতিরিক্ত টোলের কারণে টানেল ব্যবহারে অনীহা আছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। আনোয়ারা প্রান্তে শিল্প কারখানা বিকাশের পাশাপাশি কক্সবাজারের সাথে টানেল হয়ে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হলে গাড়ি চলাচল বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষক শাহজালাল মিশুক বলেন, ‘কক্সবাজারের সাথে যদি কানেক্টিভিটি বাড়াতে পারি এবং কর্ণফুলীর সাথে আনোয়ারার যে কানেক্টিভিটি বা ওই শহরগুলোকে যদি আমরা এখানে আনতে পারি, এই পরিকল্পনার মধ্যে তাহলে হয়তো এখন যেমন আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এটি আমাদের জন্য খুব ব্যয়বহুল বা লস প্রজেক্ট, সেখান থেকে আসলে লাভজনকের দিকেও যাওয়া হতে পারে।’ এমন পরিস্থিতিতে সেতু কর্তৃপক্ষ যান চলাচল বাড়াতে নিচ্ছে নানা উদ্যোগ। সেতুর উভয় প্রান্তের সড়কের নকশায় পরিবর্তন নিয়েও ভাবা হচ্ছে।
প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ওই পাশের অবকাঠামো উন্নয়নটা, নেটওয়ার্ক, ডিপ সি পোর্টের সাথে যোগাযোগ এগুলো হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেগুলো তো এখনও হয়নি। ও পাশের স্ট্র্যাকচারগুলো কীভাবে করা যায় সেটা সবার সাথে আলোচনা করে করা হবে।’ প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই টানেল দিয়ে যান চলাচল শুরু হয় গতক বছরের ২৮ অক্টোবর।
শহিদ