সুন্দরবন দুবলার চরে দেড়’শ বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব আগামী ১৪ থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী অনুষ্টিত হবে। ‘রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান’ উপলক্ষে সেখানে ৩ দিন ব্যাপী রাম মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিন দিনব্যাপী রাস উৎসবে ভক্ত-দর্শনার্থীদের সুন্দরবনে রাস পুঁজার স্থলে যাওয়া-আসা জন্য পাঁচটি রুট নির্ধারণ করা হয়েছে।
রাস মেলায় প্রবেশের রুটগুলো হলো- ঢাংমারী-চাঁদপাই স্টেশন-ত্রিকোনা আইল্যান্ড-বলার চর-আলোরকোল, বগী-বলেশ্বর-সুপতি ষ্টেশন-কচিখালী-শেলারচর-দুবলার চর-আলোরকোল, বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক-বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল-হংসরাজ নদী-দুবলার চর-আলোরকোল, কয়রা-কাশিয়াবাদ-খাসিটানা-বজবজা-আড়ুয়া শিবসা-শিবসানদী-মরজাত-দুবলার চর-আলোরকোল, নলিয়ান ষ্টেশন-শিবসা-মরজাত নদী-দুবলার চর-আলোরকোল। পুণ্যার্থীদের প্রবেশের সময় পাশ পারমিট গ্রহণ করতে হবে।
সুন্দরবনে অবস্থানের সময় কোনো প্রকার বন্যপ্রাণী ধরা, খাওয়া ও সংরক্ষণ করা যাবে না। জীববৈচিত্র্যে সংরক্ষণের স্বার্থে সিঙ্গেল ইউজার প্লাস্টিক কোন অবস্থাতেই নেওয়া যাবে না। নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা যাবে না। পুণ্যার্থী ছাড়া অন্যদের ওই সময় সুন্দরবনে ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। রাসপূর্ণিমা ও পুণ্যস্নান উপলক্ষে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণী রক্ষায় নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
বাগেরহাট জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ‘রাস উৎসব’ উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল আহসান এর সভাপতিত্বে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বাগেরহাট পুলিশ সুপার মো: তৌহিদুল আরিফ, জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ঝুমুর বালা,
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অরবিন্দ বিশ্বাস, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো: মমিনুর রহমান, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নুরুল করিম, এসিএফ রানা দেব, শেখ মাহাবুব হাসান, দ্বীপন চন্দ্র দাস, আসাদুজ্জামান, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর উপসহকারী পরিচালক মো: সাইদুল আলম চৌধুরী, দুবলারচর রাস উৎসব উদ্যাপন কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ বসু সন্তু, হিন্দু ধর্মীয় নেতা মোহন হালদার, স্বপন বিশ্বাস, সুমন দাস, পার্থ দেব সাহা, প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি বাবুল সরদার ছাড়াও নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, আনসার বাহিনীসহ আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রায় দেড় শত বছর ধরে সুন্দরবনের দুবলার চর-আলোর কোলে রাস পূজা ও রাস পূর্ণিমায় স্নান করে থাকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। পরবর্তী এই পূজাই সব ধর্মবর্ণের মানুষের মিলিত উৎসবে পরিণত হয়।