ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৩ কার্তিক ১৪৩১

পরিত্যক্ত ভবনে টেলিফোন অফিস, নেই টেলিফোন সংযোগ তবুও আসছে ভূতুরে বিল!

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ বরিশাল

প্রকাশিত: ১৬:৫৮, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

পরিত্যক্ত ভবনে টেলিফোন অফিস, নেই টেলিফোন সংযোগ তবুও আসছে ভূতুরে বিল!

বিটিসিএল-এর কার্যালযয়ের পরিত্যক্ত ভবন

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) কার্যালয়টি একটি পরিত্যক্ত ভবনে। ভবনটি এতটাই জড়াজীর্ণ যেকোনো সময় ধসে পড়ে যেতে পারে। (বিটিসিএল) কার্যালয়টিতে নামে মাত্র কার্যক্রম রয়েছে। সেবা না পেয়েও অনেক গ্রাহকদের প্রতি মাসেই গুনতে হচ্ছে টেলিফোন বিল। অনেকের টেলিফোন সংযোগ নেই বছরের পর বছর ধরে তবুও তাদের আসছে ভূতুরে বিল। এখন সেবা না পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরসহ ব্যবহারকারীরা।

বিটিসিএল বাকেরগঞ্জ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ তার ও টেলিফোন বোর্ডের (বিটিটিবি) বাকেরগঞ্জ শাখার অফিস ১৯৮৯ সালে নির্মিত হয়। ২০০৮ সালের ১ জুলাই বিটিটিবিকে পুনর্গঠন করে এর নাম দেওয়া হয় বিটিসিএল। উপজেলার এই কার্যালয়ে  ২৫০টি টেলিফোন সংযোগের ধারণক্ষমতা থাকলেও কাগজ-কলমে ৭০টি টেলিফোন সংযোগ থাকলেও  বাস্তবে ৩০টি টেলিফোন সংযোগ রয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, বিটিসিএল বাকেরগঞ্জ কার্যালয় দোতলা ভবনটি ৩৪ বছর আগের নির্মিত। ভবনটি পরিতক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ভবনটির পিলারসহ ছাদে বড় বড় ফাটল ধরেছে। ভবনটির বিভিন্ন স্থানের পলেস্তারা খসে পড়েছে। ভবনটির দরজা জানলা গ্রিল মরিচা পড়ে ভেঙে গেছে। বর্ষা মৌসুমে  ছাদ থেকে পানি পড়ে। যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পরে যেতে পারে। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের দপ্তরসহ ব্যক্তি মালিকানা টেলিফোন সংযোগ অধিকাংশ বর্তমানে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকলেও নিয়মিত বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদের। 

অপরদিকে যাদের টেলিফোনে সংযোগ রয়েছে কিন্তু সেবা পাচ্ছেন না, তারা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সংশ্লিষ্ট মহলকে একাধিকবার বলা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেনি। অথচ মাসের পর মাস বিল আসছে। ফলে সেবা না পেয়েও বাধ্য হয়ে বিল পরিশোধ করছেন বলে অভিযোগ করেন গ্রাহকেরা। 

বাকেরগঞ্জ বিটিসিএল অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাকেরগঞ্জ অফিসে একজন অফিস স্টাফ রয়েছেন। তিনি লাইনম্যান পদে নিয়োজিত। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে লাইনম্যান মো: জাকির হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও ঘূর্ণিঝড় বন্যায় কয়েকটি স্থানে বিটিসিএলের তার কাটা পড়েছে। আবার অনেক জায়গায় তার চুরি হয়ে গেছে। এতে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় কিছু গ্রাহকের টেলিফোন সেবা বন্ধ রয়েছে। জনবল সংকট থাকায় শুধু একজন লাইনম্যান দিয়েই চলছে উপজেলার কার্যক্রম। 

এ বিষয়ে বরিশার বিটিসিএলের ম্যানেজার মোঃ শামীম ফকির বলেন, অচল সংযোগগুলোর ব্যাপারে কেউ আমাদের কাছে বিচ্ছিন্ন করার কোনো আবেদন করেনি। আবেদন করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবং যেসব লাইনগুলোর সংযোগ  বিচ্ছিন্ন রয়েছে শীঘ্রই সচল করা হবে। জরাজীর্ণ ভবনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। 

বিটিসিএল বাকেরগঞ্জ কার্যালয়ের লাইনম্যান মো: জাকির হোসেন বলেন, প্রতিনিয়ত তার চুরিসহ জনবল সংকটের কারণে কিছু সংযোগ আপাতত বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ সচল হবে এটাও বলা যাচ্ছে না। তবে বন্ধ সংযোগগুলো দ্রুত চালু করার চেষ্টা করব। 
 

তাওফিক

×