গাংনী উপজেলার রাধা গোবিন্দপুর ধলা গ্রামের শতাধিক পরিবার পানিবন্দী
মেহেরপুরে গেল কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে গাংনী উপজেলার রাধা গোবিন্দপুর ধলা গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ সড়ক, ফসলের মাঠ। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন মানুষ, গবাদিপশু। এরই মধ্যে এলাকা পরিদর্শন করেছেন গাংনী উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। নেওয়া হয়েছে পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
কোথাও হাঁটুপানি আবার কোথাও কোমরপানি। এলাকার বসতবাড়ি, গ্রামীণ রাস্তা, ছোটখাটো ডোবা, সড়ক এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভেতরেও পানি থৈ থৈ করছে। অধিকাংশ বাড়িতেই হাঁটুপানি জমে আছে। আবার অনেক গোয়ালঘর, রান্নাঘরেও ঢুকে পড়েছে। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকটও। মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাধা গোবিন্দপুর ধলা গ্রাম এলাকার প্রধান সড়কে পানি নিষ্কাশনের কালভার্টটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন দুর্ভোগে পড়ে এলাকাবাসী। এলাকাবাসী বলছেন, গেল কয়েকদিনের বৃষ্টিতে প্রায় শতাধিক বসতবাড়িতে জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। একই সঙ্গে আশপাশের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ ডুবে আছে বৃষ্টির পানিতে। কৃষকদের অভিযোগ, প্রায় ১ হাজার বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
রাধা গোবিন্দপুর ধলা গ্রামের মোল্লাপাড়ার জয়নাল হোসেন বলেন, আমার ঘরের মধ্যে পানি উঠে গেছে। বাড়ির চারদিকে শুধু পানি আর পানি। রান্নাঘরে পানি ঢুকেছে, চলাচলের রাস্তাও ডুবে গেছে। বাড়ির গবাদিপশু নিয়ে এখন চরম বিপাকে আছি।
একই এলাকার বাসিন্দা সিরাজ আলী বলেন, ঘরের বারান্দা পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। রান্নার চুলা এখন পানির নিচে ডুবে থাকায় রান্না করতে পারছি না। গত তিন দিন যাবত পানিবন্দি। জাহানারা খাতুন বলেন, আজ তিন দিন ধরে আমরা পানিবন্দি হয়ে আছি। টিউবঅয়েল ও রান্নাঘর ডুবে গেছে। রান্না করতে পারছি না। অন্যের বাড়ি থেকে রান্না করে নিয়ে আসছি। বাড়িতে ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব বিপদে আছি। আমাদের দাবি, দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হোক।
আব্দুল কাদের বলেন, আমাদের এই এলাকাই শুধু না মাঠের ফসল সব ডুবে গেছে। হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল নিয়ে এখন চাষিরা চরম দুশ্চিন্তায় আছে। ধান নিয়ে সব চেয়ে বিপাকে আছে। অনেক ধান জমিতে পড়ে আছে। পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এলাকা পরিদর্শন করেছেন গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রীতম সাহা। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাময়িকভাবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভাবিষ্যতে এটার একটি স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মাঠ পরিদর্শন করেছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার। তিনি বলেন, মাঠে এখন ধান, কলাসহ বিভিন্ন ধরনের আবাদ আছে। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা তৈরি করার জন্য এরই মধ্যে নির্দেশ দিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের প্রণোদনার আওতায় আনা হবে।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজ বলেন, এরই মধ্যে আমি পানি নিষ্কাশনের সমস্যা সমাধানের জন্য নির্দেশ দিয়েছি এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।