শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার তাওয়াকোচা বালু মহালের রাজস্ব আদায় ঘরে অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের হামলায় ১০ জন আহত হয়েছে। ওইসময় হামলাকারীরা রাজস্ব আদায় ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। ২৩ অক্টোবর বুধবার রাতে ওই ঘটনা ঘটে। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত থানায় কোন অভিযোগ দায়ের হয়নি।
জানা যায়, তাওয়াকোচা বালু মহালের সোমেশ্বরী নদী থেকে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ইজারাবহির্ভূত এলাকা থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল। অভিযোগ রয়েছে, সোমেশ্বরী নদী থেকে প্রতিদিন অর্ধকোটি টাকা মূল্যের বালু লুটপাট করা হচ্ছে। বুধবার বিকেলে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল অবৈধ বালু লুটপাট বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। ওইসময় ভ্রাম্যমাণ আদলত ১৫ টি ড্রেজার মেশিন ও পাইপ ধ্বংস করে। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত শামীম নামে এক অবৈধ বালু উত্তোলনকারীকে ৫ মাসের কারাদ- দেয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দা রানী ভৌমিক, থানা পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় তাওয়াকোচা বালু মহালের রাজস্ব আদায় ঘর থেকে ইজারাদারের লোকজন পালিয়ে যায়। পরে সন্ধ্যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা শেষে উপজেলা প্রশাসন চলে গেলে ইজারাদারের লোকজন রাজস্ব আদায় ঘরে ফিরে আসে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ভাংচুরকৃত ড্রেজার মেশিন মালিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে রাজস্ব আদায় ঘরে হামলা চালায়। ওইসময় সংঘর্ষে ইজারাদারের কেয়ারটেকার বিপুল ও জনিসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে বিপুল ও জনিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।
ড্রেজার মেশিন মালিকদের অভিযোগ, নদী থেকে উত্তোলন করা বালুর ট্রাকপ্রতি রাজস্ব নেয়া হচ্ছে সাড়ে ৭ হাজার টাকা করে। তারা প্রশ্ন রেখে বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের ড্রেজার মেশিন ভাংচুর করা হবে কেন? আর বালু উত্তোলনে যদি বৈধতা না থাকে তাহলে রাজস্ব নেওয়া হচ্ছে কেন?
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বালু মহালের ইজারাদার ও ড্রেজার মালিকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বালু মহালের ইজারাদার শামীম আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ড্রেজার মেশিন মালিকরা নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে বালু উত্তোলন করছে। এতে আমাদের কি করার আছে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।