ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

পদ্মাতীরে প্রকাশ্যে মা ইলিশ বিক্রির হাট

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ

প্রকাশিত: ০০:১০, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

পদ্মাতীরে প্রকাশ্যে মা ইলিশ বিক্রির হাট

লৌহজং উপজেলার মাওয়াসংলগ্ন জসলদিয়ায় পদ্মাতীরে বসেছে মা ইলিশের হাট

লৌহজংয়ে পদ্মাতীরে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ। পদ্মা সেতুর উজান মাওয়ার যশলদিয়া পয়েন্টে ও লৌহজং-টঙ্গীবাড়ি পয়েন্টে এবং সিডারচর পয়েন্টের বিভিন্ন এলাকার নদীতে শতাধিক নৌকায় দিনরাত অবাধে মা ইলিশ নিধন চলছে। এসব ইলিশ উপজেলার পদ্মানদীর তীরবর্তী এলাকার কুমারভোগ প্রজেক্ট, সিংহেরহাটি, বেজগাঁও, শামুরবাড়ি ওস্তাকারপাড়ায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রকাশ্যে বসে মা ইলিশ বিক্রির হাট। রক্ষার পরিবর্তে পদ্মায় মা ইলিশ নিধনের এ মচ্ছব দেখার যেন নেই কেউ। পদ্মায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযান নিয়ে এলাকাবাসীর বিস্তর অভিযোগ। কিন্তু অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালিয়ে জাল জব্দ ও জেলদের জরিমানা করা হচ্ছে।
এই হাটে প্রতিদিন চলে কোটি টাকার মা ইলিশ বেচাকেনা। জেলেরা অবাধে ইলিশ ধরছে। আর ওই সব ইলিশ বিক্রিও হচ্ছে এসব স্থানে। গাঁওদিয়া ইউনিয়নের শামুরবাড়ি গ্রামের ওস্তাকারপাড়ায় সকাল ৬টা থেকে ৯টা, দুপুর ১২টা থেকে ২টা ও বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এসব হাটে চলে মা ইলিশ বেচাকেনা। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪শ’ থেকে ১৫শ’ টাকায়। দেড় কেজি ওজনের ইলিশের হালি বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে, আবার তাদের ম্যানেজ করে নদীতে চলছে ইলিশ ধরার মচ্ছব।
অনুসন্ধানে জানা যায়, লোকমান ওস্তাকার এবং রাজিব খানের নেতৃত্বে শামুরবাড়ি গ্রামে এসব ইলিশ প্রকাশ্যে বিক্রি করছে স্বপন ওস্তাকার, তপন ওস্তাকার, কাদির ওস্তাকার, সফি ওস্তাকার, দীপু ওস্তাকার, দীলু ওস্তাকার, রফিক ও মালেক। মারৈলের সেন্টু সরদার, আবুল ঢালী, শামসুদ্দিন ঢালী, কুদ্দুস সরদার এসব ইলিশ বিক্রি করছে। সিডার চরের জসিম মল্লিকের মাধ্যমে নৌপুলিশকে নৌকাপ্রতি ৩ হাজার টাকা প্রতিদিন দিয়ে নদীর মাছ শিকার করছে কলমা ইউনিয়নের মারৈল গ্রামের বানু চকিদার, সোনামিয়া ঢালী, দুলাল শেখ, দানেশ বেপারী, আজগর মাতবর, সোহাগ মাতবর, কাদির সরদার, জাকির মাদবর, জলিল সরদার, জব্বার সইয়াল, নোয়াব আালী খাঁ, লিটন সৈয়াল, শাকিল খাঁ, কামাল চোকদার ও তাদেরে সাঙ্গপাঙ্গ।

চাঁদার টাকা আদায় করে জসিম মল্লিকের কাছে নিয়ে দিচ্ছে শামুরবাড়ি গ্রামের ইদ্রিস চকিদার ও ডহরি মরৈল এলাকার সোনা মিয়া ঢালী ও আমির সরদার। স্পিডবোটের ঘাটে জেলেদের নিজস্ব লোকও বসিয়ে রাখা হয়েছে। তারাও অভিযানের তথ্য সরবরাহ করছে। মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। তবে এ নিষেধাজ্ঞা মানছে না কিছু অসাধু জেলে। নিষিদ্ধ এই সময়টাকে এখানকার জেলেরা ইলিশ উৎসব মনে করে। 
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালিয়ে জাল জব্দ ও জেল জরিমানা করা হচ্ছে। মা ইলিশ নিধনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

×