ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১

আত্রাই-নাটোর মহাসড়ক যেন মরণ ফাঁদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ

প্রকাশিত: ২৩:৫৯, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

আত্রাই-নাটোর মহাসড়ক যেন মরণ ফাঁদ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নওগাঁ হাট থেকে হামকুড়িয়া ওয়াপদা বাঁধ সড়ক

আত্রাই-নওগাঁ-নাটোর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশর্^বর্তী রাণীনগর উপজেলা থেকে আত্রাই হয়ে নাটোর পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত না হওয়ায় ঘটছে একের পর এক দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানিও ঘটছে প্রতিনিয়ত। ফলে সড়কটি প্রশস্ত করা অতীব জরুরি বলে মনে করছেন উপজেলার সচেতন মহল। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত আওয়ামী লীগ সরকারের মাঝামাঝি সময় এলাকাবাসীর যোগাযোগের উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক এ মহাসড়কটি নির্মাণ করা হয়।

এ সড়ক নির্মাণ হওয়ার ফলে নওগাঁর রাণীনগর, আত্রাই, রাজশাহীর বাগমারা, নাটোরের সিংড়া, নলডাঙ্গাসহ বিস্তীর্ণ এলাকার জনসাধারণের যোগাযোগের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। এদিকে এ সড়কের নওগাঁ থেকে রাণীনগর পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়ক ৩৪ ফুট প্রশস্ত করা হলেও রাণীনগর থেকে নলডাঙ্গা  পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার সড়ক মাত্র ১৮ ফুট প্রশস্ত রয়েছে। আঞ্চলিক এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন বাস, ট্রাক, ঢাকাগামী কোচসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। রাণীনগর থেকে নলডাঙ্গা পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত কম হওয়ায় প্রতিনিয়ত ঘটছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীর দাবি রাস্তাটি প্রশস্ত করা হোক। এদিকে নলডাঙ্গা থেকে নাটোর পর্যন্ত এ সড়কটি যথেষ্ট আঁকাবাঁকা।

নওগাঁ থেকে নলডাঙ্গা পর্যন্ত আঞ্চলিক এ মহাসড়কটি সোজা হলেও নলডাঙ্গা থেকে নাটোর পর্যন্ত মাত্র ১২ কিলোমিটার সড়কটি বিভিন্ন গ্রামের মধ্য দিয়ে আঁকাবাঁকা হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। এলাকাবাসীর দাবি নলডাঙ্গা থেকে নাটোর পর্যন্ত রেল লাইনের পাশ দিয়ে এ সড়কটি সোজা নির্মাণ করা হোক। আত্রাই-নাটোর রুটের অটোচালক রায়হান আলী বলেন, নলডাঙ্গা থেকে নাটোর পর্যন্ত সড়কটি আঁকাবাঁকা হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা যানবাহন চালাই। সেখানেও অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে নওগাঁ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল হক বলেন, নওগাঁ থেকে রাণীনগর পর্যন্ত একটি পৃথক প্রকল্প আর রাণীনগর থেকে নলডাঙ্গা পর্যন্ত আরেকটি প্রকল্প। এ ছাড়াও নলডাঙ্গা থেকে নাটোর পর্যন্ত সড়কটি রেললাইনের পাশ দিয়ে সোজা নির্মাণ করা প্রয়োজন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে সড়কটি প্রশস্ত করার প্রকল্প প্রস্তুত করা যাবে।

তাড়াশে সড়কে ভোগান্তি
সংবাদদাতা তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ থেকে জানান, তাড়াশ উপজেলার নওগঁাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ হাট থেকে হামকুড়িয়া ওয়াপদা বাঁধ পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তা পাকা না এলাকার তিনটি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিন কিলোমিটার রাস্তাটির কিছু অংশ পাকা থাকলেও তা হয়েছে প্রায় ৮-৯ বছর আগে।
জানা যায়, আঞ্চলিক এই রাস্তাটি পাকাকরণ না হওয়ায় বিরোইল, মহেশরৌহালী ও পংরৌহালী ৩টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ যাতায়াতে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হন। বর্ষা মৌসুমে কর্দমাক্ত রাস্তা দিয়ে গ্রামবাসীকে হেঁটে চলাচল করতে হয়। গ্রামগুলোর অধিকাংশ মানুষই কৃষির ওপর নির্ভরশীল। রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হওয়ায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য এবং খাদ্যশস্য পরিবহন যোগে সহজে আনায়ন করা সম্ভব হয় না।

কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, সড়কটি দিয়ে হাঁটা-চলা করা যায় না। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যায় এবং অনেক বেশি কাদা হয়। যার ফলে আমাদের স্কুলে যাতায়াত করা অনেক কষ্ট হয়। তাই আমরা সবাই সড়কটি পাকাকরণ চাই, এটি আমাদের সকলের প্রাণের দাবি।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজলুর রহমান জানান, নওগাঁ থেকে হামকুড়িয়া ওয়াপদা পর্যন্ত রাস্তার প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি পাস হয়ে এলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।

×