আবু যাইদ অপু
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলায় মসজিদ উন্নয়নের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে। আত্মসাৎ করা অর্থ উদ্ধারে স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বাবুল মিয়া নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের ধানুয়া গ্রামে।
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ধানুয়া গ্রামে সরকার বাড়ি বায়তুল মামুর জামে মসিজদ অবস্থিত। এই মসজিদে ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এই গ্রামের আবু যাইদ অপু। তিনি সভাপতি হলেও রেজুলেশন না করে দায়িত্ব নেওয়ার পর সাধারণ মুসল্লিদের না জানিয়ে নিজের ইচ্ছামতো মসজিদের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে থাকেন। আবু যাইদ অপু প্রতি মাসে উন্নয়নের নামে অর্থ সংগ্রহ করলেও মুসল্লিদের না জানিয়ে মনগড়া পরিকল্পনা মাফিক কাজ সম্পন্ন করে থাকেন। এই ছয় বছরে তার বিরুদ্ধে মসজিদ উন্নয়নের জন্য ৮ লাখ টাকা তার কাছে জমা থাকলেও তিনি মুসল্লিদের হিসাব না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন।
মুসল্লিরা আয় ব্যয় ও বিল ভাউচার দেখতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। স্থানীয় মুসল্লিদের দাবি আবু যাইদ অপু মসজিদ কমিটির সভাপতি হয়ে এলাকাবাসীকে মাইনাস করে নিজের ইচ্ছামতো মসজিদ পরিচালনা করেন। এমনকি মসজিদের উন্নয়নের নামে যেসব অর্থ আদায় করেছেন তাও খরচ করেন নিজের মনমতো। মসজিদের আয়-ব্যয়ের হিসাব চাইলে তিনি মুসল্লিদের দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। সাবেক এই সভাপতি মসজিদের ৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করায় সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অপরদিকে আবু যাইদ অপু সভাপতি থাকাকালীন সময়ে মসজিদের জমি কিছু অংশ বাদ রেখে পুরো ভবন নির্মাণ না করে কামরুজ্জামান মানিক নামে এক ব্যক্তির জমিতে মসজিদ নির্মাণ করেন। এ নিয়েও মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। এ ছাড়াও স্থানীয় মদিনাতুল উলুম নূরানীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি ছিলেন আবু যাইদ অপু। তিনি মাদ্রাসার আয় ব্যয়ের হিসাব দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। তার এমন আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আবু যাইদ অপুর হাত থেকে মসজিদের অর্থ উদ্ধার করতে অবশেষে স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ দায়েরের পর ধানুয়া গ্রামের বাবুল মিয়া জানান, মসজিদের সাবেক সভাপতি আবু যাইদ অপু ৬ বছর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তাই তার কাছে থাকা মসজিদের ৮ লাখ টাকা উদ্ধার করতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। তিনি সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত বায়তুল মামুর জামে মসজিদের সাবেক সভাপতি আবু যাইদ অপুর মোবাইল ফোনে বার বার কল দেওয়া হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অহনা জিন্নাত জনকণ্ঠকে বলেন, মসজিদের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি সমাধান করা হবে।