ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২০ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১

দখলদারদের দৌরাত্ম্যে অসহায় যাত্রী ছাউনি

নিজস্ব সংবাদদাতা,দাউদকান্দি

প্রকাশিত: ২২:১৩, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

দখলদারদের দৌরাত্ম্যে অসহায় যাত্রী ছাউনি

ছাউনিবিহীন রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রিরা।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যানবাহনের জন্য অপেক্ষমান যাত্রীরা রোদ-বৃষ্টিতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা না করে বসে আরাম করতে পাড়েন সেই দিক বিবেচনা করে সরকার নির্মাণ করেন দুইটি যাত্রী ছাউনি। তবে গভীরভাবে লক্ষ্য না করলে বোঝার কোনো উপায় নেই সত্যিকারার্থেই এগুলা যাত্রী ছাউনি। দখলদারদের দৌরাত্ম্যে বদলে গেছে এর চিত্র।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক সময়ে এসব যাত্রী ছাউনিতে পথচারী ও সাধারণ যাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে থাকলেও সময়ের পরিক্রমায় অযত্ন আর অবহেলায়  তা আজ মুখ থুবরে এক শ্রেণী মানুষের কাছে ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিণত হয়েছে। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই অঞ্চলের সাধারণ যাত্রীদের।

বাসস্ট্যান্ডের ঢাকামুখি এই অংশে ভিড়ের মধ্যে বাসে যাত্রী ওঠানামার জন্য নির্দিষ্ট স্থান থাকলেও বাস্তবে সেখানে মানুষ বসা তো দূরের কথা দাঁড়ানোরই কোনো সুযোগ নেই। যাত্রীরাও উপায়ন্তর না দেখে যত্রতত্র জায়গা থেকে গাড়িতে উঠছেন। এতে করে সব সময় এই স্থানে যানজট লেগেই থাকছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় এসব দোকানীদের উচ্ছেদ করা হলেও প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় কিছুদিনের মধ্যেই তা আবার মাথা চারা দিয়ে উঠে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। 

সরজমিনে দেখা যায়, গৌরীপুর যাত্রী ছাউনিটি দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন আর অবহেলায় বেদখল হয়ে,গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের দোকানপাট। এক পাশে কনফেকশনারীর দোকান মাঝে চায়ের দোকান ও অপর পাশে কনফেকশনারীর দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন একশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রামমূখী সড়কের পাশ ঘেঁষে গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নির্মিত যাত্রী ছাউনিটিরও একই দশা। খোলা চোখে দেখলে মনে হবে হকারদের সম্রাজ্য। এছাড়া এই যাত্রী ছাউনিতে বখাটে ছেলেদের উপস্থিতি লক্ষ্য করার মতো।

ছাউনিটিতে যাত্রীদের বসাতো দূরের কথা এর নিচ দিয়ে হাঁটাই মুশকিল হয়ে পড়েছে মন্তব্য করে এ পথে নিয়মিত চলাচলকারী নারায়ণ বনিক, ইব্রাহিম খলিল, মেহেদী হাসান জানান, ব্যস্ততম এ পথে প্রতিদিন অগণিত পথচারী চলাফেরা করেন। গত কয়েক বছর ধরে ঢাকামুখি  সড়কের পাশে নির্মিত এই যাত্রী ছাউনিটি বেদখল হয়ে পড়ে থাকায় আমাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আমরা নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে যেখানে পারছি সেখান থেকেই বাসে উঠা নামা করছি। এছাড়াও ঝড়-বৃষ্টির সময়ে আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদের ব্যাগ হাতে রাস্তায় দাড়িয়ে থাকতে হয়।যাত্রীদের দুঃখ,দুর্দশার কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষ অতি শীগ্রই এই ছাউনি গুলা দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করে পুনরায় সংস্কার করে যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার আহ্বান জানান তারা। 

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) দাউদকান্দি উপজেলা শাখার সভাপতি লিটন সরকার বাদল বলেন, যাত্রী ছাউনি সংস্কার ও দখলমুক্তসহ যাত্রীদের ব্যবহারের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। ছাউনিগুলোতে রুটের ম্যাপ দেওয়া, সেখানে কোন গাড়ি কখন আসবে সে তথ্য দেওয়ার ব্যবস্থাসহ আরও কিছু সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। যাত্রী ছাউনিতে যেন বাসগুলো থামে সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তা নিশ্চিত করতে হবে।

দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শাহীনূর ইসলাম জানান, যাত্রী ছাউনি এলাকায় প্রতিনিয়ত হকারদের উচ্ছেদ অভিযান এবং  যাত্রীদের নির্বিঘ্নে যাত্রা নিশ্চিত করতে আমাদের কর্মরত সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। যাত্রীদের হয়রানি ও মহাসড়কে সকল প্রকার দুর্ভোগ নিরসনে হাইওয়ে পুলিশ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

এবিষয়ে দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাঈমা ইসলাম বলেন,এক মাসের মতো হলো এখানে যোগদান করেছি। যাত্রী ছাউনির সম্পর্কে আপনার মাধ্যমে আমি  অবগত হয়েছি। বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে জনস্বার্থে অতি শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রিয়াদ

×