ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১

শিমলা মরিচ

প্রকাশিত: ০১:৪৫, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

শিমলা মরিচ

শিমলা মরিচ

যশোরের শার্শা উপজেলার লক্ষণপুর গ্রামে শিমলা জাতের মরিচ চাষ করে সফলতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মানিক রাজা (২৫) নামের এক যুবক। করোনা মহামারির মধ্যে প্রবাস থেকে দেশে ফিরে শুরু করেন মরিচ চাষ। এভাবেই পেয়ে যান ভাগ্যবদলের চাবিকাঠি। মাত্র ৪ লাখ টাকা ব্যয় করে দুই বিঘা জমিতে শিমলা মরিচের চাষ করে তিনি লাভ করেছেন প্রায় ১৭ লাখ টাকা।
শিমলা মরিচ ক্যাপসিকামের একটি অন্যতম জাত। এটি সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন চাইনিজ খাবারে সালাদ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি দেখতে মরিচের আকৃতির। এই মরিচ লম্বায় সর্বোচ্চ ১০ ইঞ্চি হয়। মানিক রাজা বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার পর সংসারের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন করতে পাড়ি জমাই মালয়েশিয়ায়। করোনা মহামারির সময় প্রবাস থেকে দেশে ফিরে নানা প্রতিকূলতার কারণে নিজ কর্মস্থলে আর ফিরতে পারিনি।

এমন সময় ভারতের পুনে থেকে কিছুসংখ্যক শিমলা বীজ সংগ্রহ করে বাবার ১০ শতক পতিত জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করি। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে বড় পরিসরে চাষের ঝুঁকি নেই। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে পৈত্রিক দেড় বিঘা জমিতে পুনরায় বাণিজ্যিকভাবে শিমলা মরিচের চাষ করি। চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত মরিচ খেত থেকে প্রায় ১৭ লাখ টাকার মরিচ বিক্রয় করেছেন মানিক রাজা। শুধু তাই নয় বর্তমানে তার খেতে রয়েছে আরও ৮ লাখ টাকার মরিচ। তার এই মরিচ রাজধানীর কাওরান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে। 
মানিক রাজা বলেন, আমি আমার ভাগ্যের বদল ঘটিয়েছি। আমার ইচ্ছাশক্তি আর মনোবল আমার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। আমি দেশে ফেরার পর আর প্রবাসে যেতে পারছিলাম না। ওখানে যেতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন ছিল। এমন সময় আমি ভাবলাম নিজের জমিতে কিছু একটা চাষ করি। সেই চিন্তা-ভাবনা থেকে নিজেদের জমিতে চার লাখ টাকা ব্যয়ে শিমলা মরিচের চাষ করি। তিনি আরও বলেন, কৃষি বিভাগ শুরু থেকে আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছে, যার ফলে আজ আমি এ চাষে সফল হয়েছি। চার লাখ টাকা জমিতে ব্যয় করে আমি এত টাকা লাভ করেছি।

আরও ৮ লাখ টাকার মরিচ আমার খেতে রয়েছে। যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) আবু তালহা বলেন, মানিক রাজার শিমলা মরিচ খেত আমরা পরিদর্শন করেছি। শুরু থেকেই কৃষি বিভাগ তাকে সহায়তা করেছে। তিনি এ চাষে আশার থেকেও অনেক বেশি সফল হয়েছেন। আমরা আশা করছি যশোরে এই শিমলা মরিচ চাষ আরও বৃদ্ধি করা যাবে। কৃষি বিভাগ কৃষিতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে কাজ করে চলছে।
শিমলা মরিচ চাষে আগ্রহী চাষিরা মানিক রাজার কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পাবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা মানিক রাজা। তিনি এ চাষে আগ্রহী চাষিদের কৃষি অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
সাজেদ রহমান, যশোর

×