ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১

পানি প্রবাহে বাধা

নরসুন্দায় পাথর রেখে রমরমা ব্যবসা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ

প্রকাশিত: ০০:০৪, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

নরসুন্দায় পাথর রেখে রমরমা ব্যবসা

ময়মনসিংহের নান্দাইলে নরসুন্দা নদীর পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে পাথর ব্যবসা

নান্দাইল উপজেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে নরসুন্দা নদী। আর সেই নদীকে  কেন্দ্র করে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে পাথরের মোকাম। ব্যবসায়ীরা সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বড় বড় নৌকা দিয়ে নদীপথে লাখ লাখ ঘনফুট আস্ত পাথর মুশুলী ইউনিয়নের তারেরঘাট বাজারে নিয়ে আসেন। সেই পাথর নরসুন্দা নদীর তীরে স্তূপ করে রাখা হয়। আর এতে নদীর পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি ও অবৈধ ক্যাশিং মেশিন ব্যবহার করে পরিবেশ দূষিত করা হচ্ছে।
জানা গেছে, তারেরঘাট বাজারে পাথরের মোকামটি ইজারাবিহীন ব্যবহৃত হচ্ছে। শত শত কোটি টাকার পাথরের এই হাট থেকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এ ছাড়া নদীর পানির প্রবাহে বাধার কারণে নদীর নব্য হ্রাসের পাশাপাশি যেকোনো সময় অল্প বৃষ্টিতেই প্লাবিত হয় উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা। আর পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়া পাথর ভাঙার ক্র্যাশিং মেশিন ব্যবহার করায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই এলাকায় ব্যবসায়ীদের পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো ছাড়পত্র ছাড়াই পাথর ভাঙার মেশিন ব্যবহার করে। ফলে একদিকে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, অপরদিকে শব্দ দূষণসহ পাথর ভাঙার অদৃশ্য বালুকণা আশপাশের পথচারীদের চোখে পড়ায় ক্ষতি হচ্ছে। এ ছাড়া পাথরবহনকারী ছোট-বড় নৌকা থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে। তারেরঘাট বাজারের একাধিক পাথর ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানায়, ব্যবসায়ীরা যেখানে পাথর রাখছেন সেটি নদীর চর। অনেকেই ব্যক্তিগত জমি ভাড়া নিয়ে পাথর রাখেন। সম্প্রতি বৃষ্টিপাতের কারণে নরসুন্দা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই দূর থেকে মনে হয়েছে নদীর ওপর পাথর রাখা হয়েছে।
তারেরঘাট পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বাচ্চু বলেন, নদী থেকে পাথর সরানোর জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন দিনের সময় বেধে দিয়েছে। তবে এত কম সময়ে পাথর সরানো সম্ভব নয়। মুশুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতেকার উদ্দিন ভূইয়া বিপ্লব বলেন, সরকারি ইজারা ডাক ছাড়া শুধু ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করছে। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এই বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়জুর রহমান বলেন, নরসুন্দা নদীতে পাথর রাখার জন্য পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্ন হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা পাথর ভাঙার জন্য ক্র্যাশার মেশিন ব্যবহার করছেন। 
এই মেশিন ব্যবহার করতে হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন প্রয়োজন। নদী থেকে পাথর সরানোর জন্য ব্যবসায়ীদের তিন দিন সময়  দেওয়া হয়েছিল। খরব নিয়ে জেনেছি এখনো পাথর সরানো হয়নি। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

×