ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১

কাপড় লন্ড্রি করেই সংসার চলে রঞ্জিতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, দৌলতখান

প্রকাশিত: ২২:০৫, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

কাপড় লন্ড্রি করেই সংসার চলে রঞ্জিতার

দোকানে লন্ড্রির কাজ করছে রঞ্জিতা

এক সন্তানের জননী রঞ্জিতা রাণী, বয়স ৩৫ বছর। বিধবা ওই নারী বর্তমানে টিনশেড এর লন্ড্রির দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করছে। লন্ড্রি চললে, চলে তার সংসার। ১৮ বছর আগে ভোলার কালী-খোলা যোগী বাড়ির মৃত হরিজন দেবনাথের ছেলে কালা চাঁন বাবু দেবনাথের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।

 বিয়ের পরে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখে কাটছিলো। এরই মধ্যে তাদের কোল জুড়ে শ্রীকান্ত দেবনাথ নামে একমাত্র ছেলে সন্তান পৃথিবীতে আসে। এতে তাদের খুশির শেষ নেই। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, ছেলে সন্তান জন্মের এক মাস ১০ দিন পর পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী সন্তান রেখে কালা চাঁন বাবু দেবনাথ অন্যত্র চলে যান।

পরে রঞ্জিতা রাণী ১১ মাস পর তার স্বামী কালা চাঁন বাবু দেবনাথের পরলোকগমনের খবর পায়। এ শোককে শক্তিতে পরিণত করে বৃদ্ধ বাবা-মা ও সন্তানের জীবিকার জন্য অন্যের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে আসছে রঞ্জিতা রাণী। গৃহপরিচারিকার কাজ করলেও দুবেলা-দুমুঠো জুটতো না নিয়মিত। তাদের কষ্ট দেখে এলাকার লড্রির দোকানি দিলিপ রঞ্জিতাকে লন্ড্রির কাজ শেখান। রঞ্জিতা রাণী ভোলার দৌলতখান পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের মৃত প্রাণ কৃষ্ণ হাওলাদার এর মেয়ে। 

কান্না জড়িত কণ্ঠে রঞ্জিতা রাণী দৈনিক জনকণ্ঠকে জানান, ১৮ বছর আগে কালা চাঁন বাবু দেবনাথের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে আমাদের সংসার ভালো কাটছিলো। ছেলে শ্রীকান্ত দেবনাথের জন্মের পর পারিবারিক কলহের কারণে স্বামী কালা চাঁন বাবু দেবনাথ আমাদের ছেড়ে চলে যায় । ১১ মাস পর তার মৃত্যুর খবর পাই। বৃদ্ধ বাবা-মা ও সন্তানের কষ্ট দেখে প্রতিবেশী দিলিপ আমাকে লন্ডির কাজ শেখান। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় দৌলতখান উপজেলা ব্রীজ সংলগ্নে একটি টিনশেড দোকান নির্মান করে দেয়। লন্ড্রির দোকানে কোনদিন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা রোজগার হয়। আবার কখনও ১০০ টাকার নিচে। লন্ড্রি চললে, চলে আমাদের সংসার।

তিনি আরও বলেন, তার ছেলে শ্রীকান্তের স্বপ্ন লেখাপড়া করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকুরি করার। শ্রীকান্ত দৌলতখান সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। তিনি বলেন, সামান্য উপার্জনে ছেলে লেখাপড়ার খরচ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। রঞ্জিতা রাণীর অভিযোগ, অসহায় বিধবা নারী হয়ে সরকারি কোন ভাতা সুবিধা পায়না তিনি।


স্থানীয়রা জানান, রঞ্জিতা রাণী খুবই অসহায়। বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে রঞ্জিতা রাণীর পরিবারটির কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে।

রিয়াদ

×