ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১ কার্তিক ১৪৩১

সাটুরিয়ায় তিন বছরেও শেষ হয়নি ৫ কিমি সড়কের সংস্কার কাজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:০২, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

সাটুরিয়ায় তিন বছরেও শেষ হয়নি ৫ কিমি সড়কের সংস্কার কাজ

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে দড়গ্রাম পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়কটির সংস্কার

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে দড়গ্রাম পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়কটির সংস্কার কাজের তিন বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তা শেষ হয়নি ঠিকাদারের গাফলতি স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতায় দশমিক ৮৫ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজম্পূর্ণ হতে সময় বেশি লাগছে বলে অভিযোগ স্থানীয় লোকজন পথচারীদের

তাছাড়াও সড়ক মেরামতের কাজ কবে শেষ হবে তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই বছর তিনেক আগে থেকে সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হলেও এখন পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তার কাজ বাকি রয়েছে ফলে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের

গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন উপজেলার ঘিওর, হরগজ, দড়গ্রাম, শিমুলিয়া, তিল্লি, গোপালপুর, বরাইদসহ ২৫ গ্রামের মানুষের চলাচল ছাড়াও এই সড়কের পাশেই রয়েছে উপজেলার সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিদিন হাজারো শিক্ষার্থীদের এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ছাড়াও কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় স্থানীয়দের ধুলাবালির মধ্যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এবং পথচারী যানবাহনগুলোকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে বিশেষ করে রাতের বেলায় যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে আরও বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়

সাটুরিয়া উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, সাটুরিয়া-দড়গ্রাম সড়কের দশমিক ৮৫ কিলোমিটার সড়কের প্রশস্তকরণ কার্পেটিংয়ের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিল কোটি ২০ লাখ ৭২ হাজার টাকা কাজের দায়িত্ব পায় মানিকগঞ্জের হোসাইন কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠানটি দায়িত্ব পেয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরের ২১ জুলাই কাজ শুরু করে দরপত্রের চুক্তি অনুযায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের এপ্রিলে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল

প্রতিষ্ঠানটিকে রাস্তার সংস্কার কাজ সম্পন্ন করার জন্য দুই বছরের সময় বেঁধে দেওয়া হলেও তারা সঠিক সময়ে কাজ সম্পন্ন না করে বিভিন্ন সময়ে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে একাধিকবার কাজ বন্ধ করে রেখে চলে গেলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি ফলে সড়কেরস্কার কাজের এই ধীরগতি

স্থানীয় বাসিন্দা তৌহিদুজ্জামান বলেন, ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্ট কারো এই সড়ক নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই সামান্য দশমিক ৮৫ কিলোমিটার রাস্তা করতে বছরের উপরে সময় লেগে গেছে তারপরও কাজ শেষ হওয়ার নামগন্ধ নেই কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উদাসীনতায় কাজ শেষ না হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে সড়কে চলাচলকারীরা তিনি আরও বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তাটির কারণে অনেক কষ্ট করছি আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই

লুতফর মিয়া নামের এক পথচারী বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সড়ক এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত বাস-ট্রাকসহ যাত্রীবাহী পণ্যবাহী ছোট-বড় নানা ধরনের যানবাহন চলাচল করে থাকে কিন্তু সড়কের সম্পন্ন কাজ শেষ না হওয়ায় আমাদের ধুলাবালুর মধ্যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এবং ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে

অটোরিক্সা চালক সুরুজ আলী বলেন, এই সড়কে চলাচলের সময় সিএনজি, ব্যাটারিচালিত রিক্সা থ্রি-হুইলার উল্টে প্রায়ই ছোট ছোট দুর্ঘটনা ঘটছে এরই মধ্যে রাস্তার উপরে অনেক জায়গায় তৈরি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দের ছাড়াও বৃষ্টি হলে ছোট বড় খানাখন্দের গভীরতা বোঝা যায় না বৃষ্টির পানিতে গর্তগুলো ভরে থাকে ফলে অনেক সময় গাড়ির চাকা উল্টে নানা ধরনের দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়

ব্যাপারে হোসাইন কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার মো. ইব্রাহিম মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, দীর্ঘদিন সড়কের সংস্কার কাজটি বন্ধ থাকার মূল কারণ হলো নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি এবং তাদের ফান্ড স্বল্পতা তাই এই জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে তবে বাকি দেড় কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ খুব কম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে বলেও তিনি জানান

সাটুরিয়া উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে ৭৪ ভাগ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে এখন পর্যন্ত কাজের মেয়াদ তিনবার বাড়ানো হয়েছে তবে কাজ সম্পন্ন হতে এত দেরি হওয়ার কারণ বলতে পারছি না আমরা তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে বার বার তাগিদ দিচ্ছি কিন্তু কাজ তো সম্পন্ন করা হচ্ছে না

বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইমরুল হাসান বলেন, দীর্ঘদিন সড়কের সংস্কার কাজ বন্ধ ছিল ফলে পথচারীসহ সড়কে চলাচলকারীদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে কিন্তু বর্তমানে সড়কের সংস্কার কাজ চলছে সড়কের পুরো কাজটা প্রায় শেষের দিকে বাকি রয়েছে মাত্র দেড় কিলোমিটার কাজ আশা করা যাচ্ছে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে বাকি কাজটুকু শেষ হয়ে যাবে

×