শিপলা খাতুন
দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে মাতৃহারা শিপলা খাতুন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। অদম্য মেধাবী এই শিক্ষার্থীর ফলাফলে খুশি তার পরিবারের সদস্য ও শিক্ষকবৃন্দ। শিপলা নিজেও খুশি। তবে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণে তমসাবৃত পথের কথা ভেবে দুশ্চিন্তা তার মনে। শিপলা জানেন না, কীভাবে তার উচ্চশিক্ষার স্বপ্নসাধ পূরণ হবে।
অদম্য মেধাবী শিপলা খাতুন এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় যশোরের চৌগাছা উপজেলার মৃধাপাড়া মহিলা কলেজ হতে বাণিজ্য শাখায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এসএসসিতেও বাণিজ্য শাখায় জিপিএ-৫ পাওয়ার পাশাপাশি জেএসসিতে বৃত্তি পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন তিনি। শিপলা খাতুন চৌগাছা উপজেলার ধুলিয়ানী ইউনিয়নের কুষ্টিয়া রামভাদ্রপুর গ্রামের দিনমজুর পিতা নজরুল ইসলামের চার মেয়ের মধ্যে সবার ছোট।
শিপলা খাতুন জানান, দশম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার মা রাশিদা বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। অভাব দরিদ্রতার কারণে তার পিতা বড় তিন বোনকে বিয়ে দিয়ে দেন অনেক আগেই। মা মারা যাওয়ার পর তাই বড়ই অসহায় হয়ে পড়েন শিপলা। কিন্তু পড়ার টেবিল থেকে দূরে সরে যাননি তিনি। ধুলিয়ানী সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এইচএসসিতে ভর্তি হয় চৌগাছা মৃধাপাড়া মহিলা কলেজে। গ্রামের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে কলেজে নিয়মিত যাতায়াত করেও তার ক্লান্তি ছিল না।
মঙ্গলবার এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শিপলা খাতুন। তার বিশ্বাস ছিল, জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করবেন। কিন্তু পাসের পর কি হবে সেই চিন্তায় হাসি নেই শিপলার মুখে। বরং অর্থাভাবে লেখাপড়ার এখানেই ইতি ঘটবে কি না; সেই আশঙ্কার কালো মেঘ তার মুখে।
স্বপ্নের কথা তুলে ধরে মেধাবী শিপলা জানান, এখন তার স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাববিজ্ঞানে লেখাপড়া করে বিসিএস পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে প্রশাসনের ক্যাডার হতে চান তিনি। একজন প্রশাসনিক ক্যাডার হয়ে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার স্বপ্ন তার।