ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

নিত্যপন্যের দাম বৃদ্ধি

বাজার মনিটরিংয়ে ডিসি

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ১৯:১৩, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

বাজার মনিটরিংয়ে ডিসি

বাজার মনিটরিংয়ে জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান

নিত্যপন্যের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান সোমবার বিকেলে সরেজমিনে বাজার পরিদর্শন করেন। এসময় জেলা ‘নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর বাজার পরিস্থিতি ও সরবরাহ চেইন তদারক ও পর্যালোচনা সংক্রান্ত বিশেষ টাস্কফোর্স’ কমিটির সদস্যরা তাঁর সাথে ছিলেন। এরআগে ৪ টার দিকে বাজার মনিটরিং কমিটির জরুরী সভা জেলা প্রশাসকের সন্মেলন কক্ষে অনুষ্টিত হয়। বাজার পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক সর্বস্তরের ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের সাথে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।জেলা প্রশাসক বিভিন্ন দোকানে পন্যের দাম ও ভাউচার যাচাই করেন। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে পণ্যের যৌক্তিক মূল্যসহ উৎপাদন, পাইকার ও ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য মূল্যের পার্থক্য ন্যূনতম রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের দাম স্বাভাবিক রাখতে বানিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আমরা ইতোমধ্যে “বিশেষ টাস্কফোর্স” গঠন করেছি। এই টাস্কফোর্স নিয়ে আমরা মনিটরিং শুরু করেছি। ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলা এবং বাজার দর যাচাই করছি।  নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার ভিতরে রাখতে এই মনিটরিং অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।  

এসময় অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অরবিন্দ বিশ্বাস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: আরিফুল হক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মমিনুর রহমান, এনডিসি তারেক রহমান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান,জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাকিল আহমেদ, বাগেরহাট ক্যাব এর সভাপতি বাবুল সরদার, ছাত্র প্রতিনিধি আরমার শিকদার, মিরাজ শেখ-সহ জেলা মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, সোমবার সকালে বাগেরহাট শহরের বড় বাজারে সাড়ে ৫’শ টাকা কেজিপ্রতি কাঁচা মরিচ বিক্রি হতে দেখা গেছে। সপ্তাহখানেক আগেও যার দাম ছিল ১৮০-২২০ টাকা। একইসাথে সবজি, মশলা, মাছ ও চালসহ সব ধরণের নিত্য পন্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সব থেকে বেশি বেড়েছে কাঁচা মরিচের ঝাল। দেখাগেছে, ৫৫ টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, ৩০ টাকার মিস্টি কুমড়া পৌছেছে ৬০ টাকা, ৪০ টাকার শসা ৬০-৭০ টাকা, করলা ৮০, বেগুনের কোন গুন না থাকলেও, দাম বেড়েছে দ্বিগুন, ৭০ টাকার বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়।টমেটো ২৬০ টাকা, পেপে ৫০ টাকা, ঢেড়স ৬০, কুশি ৮০, পোটল ৯০, কচুর মুখি ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক কথায় ৬০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই বাজারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন সরবরাহ কম তাই দাম বেড়েছে।

অন্যদিকে মা ইলিশ রক্ষায় সমুদ্রে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় বাজারে সাগরের মাছের সরবরাহ কমেছে। সেই সুযোগে স্থানীয় উৎপাদিত মাছ বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। রুই, কাতলা, মৃগেল, গ্রাসকার্প, নালোটিকা, চায়না পুঠি, সিলভারকার্প আকার ভেদে ৩০০ থেকে ৫শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টেংরা মাছ, হরিণা চিংড়ি, চামি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত। পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০-২৮০ টাকা পর্যন্ত। চাষের কৈ ২০০-২৫০ টাকা, শোল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৬০০টাকা, টাকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০-৩০০টাকা, রুপচাদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা দাঁতনে মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০-৫০০ টাকা, পুটি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০-১২০ টাকা, জাবা ২৬০-৩৫০ পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এত বেশি দামে মরিচ কেন বিক্রি হচ্ছে এ প্রশ্নের উত্তরের বিক্রেতা শেখ তলিফ বলেন, কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে অনেক সবজির বাগান নষ্ট হয়ে গেছে। তাই কাঁচা মরিচসহ সবজির দরও বাড়তি।

বাজার করতে আসা আরিফ হাসান বলেন, ১৫ দিন আগেও কাঁচা মরিচসহ সবজির দাম কিছুটা কম ছিল। চলতি সপ্তাহে দাম অনেক বেড়েছে। ২০০ গ্রাম কাঁচা মরিচ কিনেছি ১৪০ টাকায়। কি ভাবে বেঁচে থাকবো আমরা.?

হালিমা বেগম বলেন, এক সপ্তাহেই মরিচের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। এই ভাবে চলতে থাকলে আমাদের বেছে থাকা কষ্ট হয়ে দাঁড়াবে বর্তমান সরকার কাছে অকুল আবেদন যেন এই বিষয়ের দিকে নজর দেন।

এদিকে চালের দামও বেড়েছে ৫ থেকে দশ টাকা করে। বুলেট ও স্বর্না বুলেট প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, চিকন চাল জাত ভেদে ৬০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে স্থানীয় মোটা চাল ও ভোজন চালের।

বাগেরহাট ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান বলেন, বাজার দর নিয়ন্ত্রণ ও সাধারন মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে বাজার মনিটরিং টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। আমরা নিয়মিত বাজারে অভিযান চালাচ্ছি। কোথাও অসঙ্গতি ও অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

 

শহিদ

×